পাতা:নীল তারা ইত্যাদি গল্প - পরশুরাম.pdf/৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮২
নীল তারা ইত্যাদি

কথা বলুন দাদা, আমি আর ওদের ফাঁদে পা দিচ্ছি না।

 আমি প্রশ্ন করলাম, কি দরকার আপনার?

 —বড়ই দুঃসংবাদ, নীলকণ্ঠ বেচারা মারা গেছে।

 আমরা দুজনেই চমকে উঠে বললাম, অ্যাঁ, বলেন কি!

 —হাঁ মশায়। কাল সন্ধ্যেয় কলকাতায় পৌঁছেই সোজা এখানে এসেছিলাম, একটা ভাল সম্বন্ধ পেয়েছি কিনা। এসে দেখি, নীলকণ্ঠ নেই, ডাক্তারবাবুও বেরিয়ে গেছেন। একটি ছোকরা কম্পাউণ্ডার বলল, নীলকণ্ঠবাবু চার আউন্স বিষ নিয়ে লেকে গেছেন, তাঁর মতলব ভাল নয়, যান যান, এখনই সেখানে গিয়ে খবর নিন। গিয়ে শুনলাম, লেকের ধারে একটা লাশ পাওয়া গেছে, পুলিস মর্গে চালান দিয়েছে।

 আমি বললাম, লেকে তো প্রায়ই লাশ পাওয়া যায়, ও জায়গাটা হচ্ছে হতাশ প্রেমের ভাগাড়। নীলকণ্ঠবাবু কি দুঃখে মরবেন?

 ভজু-মামা বললেন, না মশায়, আপনি জানেন না, নির্ঘাত নীলকণ্ঠ। বেচারা বিয়ে করে হতাশ হয়েছে কিনা। আমি তখনই ছুটে মর্গে গেলাম, কিন্তু ঢুকতে পেলাম না। বলল, এখন ঘর বন্ধ, কাল সকালে এসো। আজ সকালে আবার সেখানে গেলাম। সারি সারি সব শুয়ে আছে, তার মধ্যে একটি হচ্ছে আমাদের নীলকণ্ঠ। হেবোর কাছে তার চেহারার যেমন বর্ণনা শুনেছি হুবহু মিলে গেল।

 নীলকণ্ঠ এতক্ষণ চুপ করে ছিলেন। এখন আতঙ্কিত হয়ে বললেন, বয়স কত?