পাতা:নূতনের সন্ধান - সুভাষচন্দ্র বসু.pdf/৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নূতনের সন্ধান

অভ্যুত্থান ও পতনের কারণ নির্দ্দেশ করিতে পারিয়াছেন বলিয়া মনে করেন। তাঁহাদের গবেষণার সার মর্ম্ম এই যে, ব্যক্তির জীবনে যেরূপ জন্ম মৃত্যু বিকাশ আছে, জাতীর জীবনেও তদ্রূপ জন্ম, উন্নতি ও মৃত্যু আছে। জীবনীশক্তি হ্রাস পাইলে ব্যক্তি যেরূপ মৃত্যুমুখে পতিত হয়, জাতিও তদ্রূপ মুমূর্ষু হইয়া পড়ে। কখনও জাতিবিশেষ ধরাপৃষ্ঠ হইতে একেবারে বিলুপ্ত হইয়া যায় এবং মাত্র ইতিহাসের পৃষ্ঠায় তার অস্তিত্বের নিদর্শন পাওয়া যায়, কখনও বা জাতিবিশেষ একেবারে বিলুপ্ত না হইয়া নররূপী পশুর মত কোন প্রকারে জীবন ধারণ করতে থাকে। যে জাতি নিতান্ত ভাগ্যবান সে জাতি মৃত্যুর দ্বারদেশে উপনীত হইয়াও আবার পুনর্জন্ম লাভ করে। কিরূপ অবস্থায় জাতির পুনর্জন্ম হওয়ার সম্ভাবনা আছে তাহাও কোন কোন বৈজ্ঞানিক নির্দ্দেশ করিবার চেষ্টা করিয়াছেন। বিভিন্ন জাতির রক্ত সংমিশ্রণের ফলে এবং বিভিন্ন শিক্ষার (culture) সংস্পর্শের ফলে জাতীর এবং জাতীয় সভ্যতার পুনর্জন্ম হইতে পারে। পাশ্চাত্য বৈজ্ঞানিকের বাণী আমরা গ্রহণ করি আর না করি একথা বোধ হয় স্বীকার করিতে হইবে যে ভারতবর্ষে বিভিন্ন জাতির মধ্যে রক্ত সংমিশ্রণ ঘটিয়াছে এবং বিভিন্ন জাতির আগমনের ফলে এই ভারতভূমি বিভিন্ন শিক্ষা-ধারার সঙ্গমস্থলে পরিণত হইয়াছে। হয়ত, এই সংমিশ্রণের দরুণই ভারতীয় জাতি ও ভারতীয় সভ্যতা বারবার মৃত্যুমুখে পতিত হইয়াও পুনর্জন্ম লাভ করিয়াছে

৮৪