পাতা:নেতাজীর জীবনী ও বাণী - নৃপেন্দ্রনাথ সিংহ.pdf/১৭১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

প্রলয়ঙ্কর বন্যা ও ঝটিকা

 ১৯৪২ সালের ১৬ই অক্টোবরের প্রলয়ঙ্কর বন্যা ও ঝটিকার দিন ও পরেও মেদিনীপুর জেলায় উপরোক্ত প্রকারের নৃশংস কায্যকলাপ সমানভাবে গভর্ণমেণ্ট চালাইতে থাকে। এমন কি তমলুকের মহকুমা হাকিম কলিকাতা হইতে ঘুর্ণিবার্ত্তার সম্ভাব্যতা সম্পর্কিত তিন খানি টেলিগ্রাম পাওয়া সত্বেও তিনি তৎসমন্ধে জনসাধারণকে সাবধাণ করা এবং এই সংবাদ প্রচার করিবার জন্য কোনরূপ ব্যবস্থাই অবলম্বন করেন নাই। অধিবাসীবৃন্দের তরফ হইতে সেই দুর্যোগ-ঘন-রাত্রির জন্য সাময়িক ভাবে সান্ধ্য আইন প্রত্যহারের দাবী জানালে তিনি তাহাতে কর্ণপাত করেন নাই।

 এই বন্যা ও ঝড়ের সংবাদ এবং ইহার ফলে যে সমস্ত ক্ষতি হয় তৎসংক্রান্ত সমুদয় সংবাদই চাপিয়া রাখা হয়। গাছের মাথায় ও ঘরের চালায় আশ্রয় লইয়া যাহারা জলোচ্ছ্বাসের হাত হইতে কোনমতে আত্মরক্ষা করিয়াছিল, তাহাদের নিরাপদ স্থানে পৌছিয়া দিবার জন্য নিষিদ্ধ এলাকায় নৌকা চলাচল পর্য্যন্ত করিতে দেওয়া হয় নাই। যথাযথ সাহায্যের অভাবে যখন শত শত গ্রামবাসী মরিতেছিল তখন সপ্তাহের পর সপ্তাহ ধরিয়া কোনরূপ সরকারী সাহায্যের ব্যবস্থা তো করা হয় নাই, এমন কি বে-সরকারী সাহায্য-প্রতিষ্ঠানগুলিকে পর্য্যন্ত মাসখানেক যাবত কোনরূপ কাজ করিবার অনুমতি দেওয়া হয় নাই। মাড়োয়ারী রিলিফ লোসাইটীর জনৈক কর্ম্মী সাহায্যের প্রয়োজনীয়তা নির্দ্ধারণের জন্য আনিলে তাঁহাকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং দুর্গতদের সাহায্য দানের জন্য তিনি চাউল এবং অন্যান্য জিনিষ সঙ্গে আনিয়াছিলেন তাহা কর্তৃপক্ষ কর্ত্তৃক বাজেয়াপ্ত করা হয়।