পাতা:নেতাজীর জীবনী ও বাণী - নৃপেন্দ্রনাথ সিংহ.pdf/৪০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০
সুভাষচন্দ্রের জীবনী ও বাণী

 হরিপুরা কংগ্রেস—১৯৩৮ সালের কংগ্রেস সভাপতির জন্য বিভিন্ন প্রদেশ হইতে চারজনের নাম প্রস্তাবিত হয়—সুভাষ চন্দ্র, মৌলানা আজাদ, জহরলাল, আবদুল গফরখান। সুভাষচন্দ্রের দেশের জন্য স্বার্থত্যাগের হেতু বাকী তিনজন সুভাষচন্দ্রের অনুকুলে নাম প্রত্যাহার করেন। সুভাষচন্দ্রই সভাপতি মনোনীত হন। ১৯৩৮ সালের ১৪ই জানুয়ারী তিনি বিমানে দেশে পৌঁছান।

 তাপ্তীনদীর তীরে হরিপুরা গ্রামে কংগ্রেসের অধিবেশন হয়। মহাত্মার নির্দ্দেশে এই প্রথম গ্রামে কংগ্রেসের অধিবেশন হয়। সভাপতিকে গ্রাম্য কায়দায় অভ্যর্থনা করা হয়। প্যাটেলের স্মৃতির জন্য কংগ্রেসের জায়গাটার নাম হইয়াছিল ‘বিঠল নগর’। ইহা কংগ্রেসের ৫১ তম অধিবেশন সেইজন্য প্যাণ্ডালে ৫১টি গেট ছিল, ৫১টি জাতীয় পতাকা উড্ডীন ছিল। সভাপতিকে ১টি বলদ চালিত সুসজ্জিত রথে শোভাযাত্রা করিয়া আনা হয়। রথের পশ্চাতে ছয়টি গরুর গাড়ীতে নেতারা ছিলেন। একদল বাসন্তী রঙের শাড়ী পরিহিতা বালিকা সভাপতির কপালে কুম্কুম্ পরাইয়া তাঁহাকে বন্দনা করে। শোভাযাত্রায় প্রতি সারে দশ জন লোক ছিল এবং শোভাযাত্রাটি বার মাইল দীর্ঘ হইয়াছিল। বিঠল নগরে প্রায় আড়াই লক্ষ লোকের সমাবেশ হয়। সুভাষচন্দ্র সারাজীবন দেশের জন্য দুঃখ নির্য্যাতন বরণ করেছেন। সেইজন্য দেশবাসী তাঁহাকে শ্রেষ্ঠ সম্মান দেখাইলেন। তখন সুভাষচন্দ্রের বয়স মাত্র ৪১ বৎসর।