পাতা:নেতাজীর জীবনী ও বাণী - নৃপেন্দ্রনাথ সিংহ.pdf/৯৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সুভাষচন্দ্র সৈনিকগণকে ভারতভূমিতে পতাকা উত্তোলনের আহ্বান জানাইয়া নিম্নলিখিত বাণী দেন


 “বন্ধুগণ, ১৮৫৭ সালের পর এই প্রথমবার আমরা স্বীয় গভর্ণমেণ্ট প্রতিষ্ঠা করিলাম। বিদেশের বহু শক্তিশালী রাষ্ট্র এই গভর্ণমেণ্টকে স্বীকার করিয়া লইয়াছেন। ১৮৫৭ সালের পর এই প্রথমবার ভারতের বাহিরে বিশেষতঃ ইউরোপ ও এশিয়ার ভারতীয়েরা স্বদেশের স্বাধীনতার যোদ্ধাদের পাশাপাশি দাঁড়াইয়াছে। ভারতে বিপ্লবের ভিত্তিভূমি প্রতিষ্ঠিত হইয়াছে। অত্যাচারীর নির্দয় শোষণের ফলে ভারতে দুর্ভিক্ষ ও অনাহারের যে তাণ্ডবলীলা চলিতেছে, তাহাই ভারতবাসিগণকে বিপ্লবের পথে ঠেলিয়া দিতেছে। ভারতের স্বাধীনতার শেষ সংগ্রাম আরম্ভ করার উপযোগী সময় আজ উপস্থিত। স্বদেশে ও বিদেশে অবস্থিত আমার দেশবাসীগণ! আর সময় নষ্ট করিও না। তোমরা প্রস্তুত হও এবং এ মুহূর্তেই শেষ সংগ্রামে অবতীর্ণ হও। পূর্ব এশিয়ায় শক্তিশালী মিত্ররাষ্ট্রের সাহায্য লইয়া আমরা যথাসাধ্য কাজ করিতেছি। শীঘ্রই আমরা ভারতের সীমান্ত অতিক্রম করিব এবং ভারতভূমিতে স্বাধীনতার পতাকা উত্তোলন করিব। অতঃপর দিল্লী অভিমুখে আমাদের ঐতিহাসিক যাত্রা সুরু হইবে। সর্বশেষ ইংরাজটি ভারতবর্ষ ত্যাগ করিলেই এ যাত্রা শেষ হইতে পারে, কিন্তু তাহার পূর্বে নহে। দিল্লীর বড়লাট ভবনে যেদিন আমাদের জাতীয় পতাকা সগৌরবে উড়িতে থাকিবে এবং যেদিন ভারতের মুক্তিফৌজ প্রাচীন লালকেল্লার অভ্যন্তরে বিজয়-উৎসবে মাতিয়া উঠিতে পারিবে—কেবলমাত্র সেদিনই এ অভিযানের শেষ হইবে।”

সুভাষচন্দ্র বসুর নির্দেশনামা।