পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/১১৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আজাদ হিন্দ সরকার সম্পূর্ণ স্বাধীন এক শাসনতন্ত্র। এবং এই স্বাধীন ভারতের প্রকৃত রূ:প জানতে হলে আজাদ হিন্দ গভর্ণমেণ্টের প্রথম ঘোষণাপত্র সম্বন্ধে আমাদের কিছু জানা দরকার। এই ঘোষণা পত্রের বাঙ্গলা পরিভাষা নীচে দেওয়া গেল:

 ১৭৫৭ সালে বাঙ্গলায় বৃটিশের হাতে প্রথম পরাজয়ের পর ভারতের অধিবাসীরা একশ’ বছর ধরে ক্রমান্বয়ে একের পর এক কঠিন নিরবচ্ছিন্ন সংগ্রাম চালিয়ে আসছে। এই সময়ের ইতিহাস বহু বীরত্ব ও আত্মত্যাগে পরিপূর্ণ। ইতিহাসের পাতায় অনেকেব মধ্যে বাঙ্গলার সিরাজদ্দৌলা ও মোহনলাল, দক্ষিণ ভারতের টিপু সুলতান ও ভেলু তম্পী, মহারাষ্ট্রের আপ্পা সাহেব ভোঁসলে ও পেশোয়া বাজীরাও, অযোধ্যার বেগমগণ, পাঞ্জাবের সর্দার শ্যাম সিং আতারিওয়ালা এবং শেষতঃ ঝাঁসির রাণী লক্ষ্মী বাঈ, তান্তিয়া তোপী, দুমরাঁওয়ের মহারাজ কুনওয়ার সিং এবং নানা সাহেবের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখিত আছে।

 আমাদের দুর্ভাগ্য যে আমাদের পূর্বপুরুষেরা বুঝতে পারে নি সমগ্র ভারতেব পক্ষে বৃটিশ কি ভয়াবহ সঙ্গীন অবস্থার সৃষ্টি করছিল এবং সেইজন্য তারা ঐক্যবদ্ধ ভাবে শত্রুর বিরুদ্ধে দাঁড়াতে পারে নি। অবশেষে যখন তারা অবস্থার প্রকৃত তাৎপর্য বুঝতে পারলো তখন ভারতের অধিবাসীরা একতাবদ্ধ হয়ে ১৮৫৭ সালে বাহাদুর শাহের অধীনে স্বাধীন মানুষের মত শেষ যুদ্ধ করে। যুদ্ধের প্রথম দিকে কয়েকটা গৌরবময় জয়লাভের পরও দুর্ভাগ্যবশতঃ এবং ভুল পরিচালনার ফলে শেষ পর্যন্ত বিধ্বস্ত হয়ে যায় এবং বশ্যতা স্বীকার করে। যাই হোক আমাদের আরও ত্যাগ ও বীরত্বের দিকে অনুপ্রাণিত করবার জন্যে ঝাঁসীর রাণী, তান্তিয়া তোপী, কুনওয়ার সিং এবং নানা সাহেব সমগ্র জাতির হৃদয় আকাশে তারকার মত উজ্বল হয়ে থাকবে।

 ১৮৫৭ সালের পর বলপূর্বক নিরস্ত্র হওয়ার পর এবং বহু অত্যাচার ও নৃশংসতায় জর্জরিত হয়ে ভারতবাসী কিছু দিনের জন্য মাথা নত করে পড়েছিল—কিন্তু

১০৪