পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/১১৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সঙ্গে একযোগে চিন্তা শিখেছে তা নয় তারা তালে তালে পা ফেলে স্বাধীনতার দিকে এগিয়ে চলেছে। বিশেষ করে পূর্ব এশিয়ায় প্রায় কুড়ি লক্ষ ভারতীয় পূর্ণ সমর সজ্জার আহ্বানে অনুপ্রাণিত হয়ে এক ঘন সন্নিবিষ্ট ব্যূহে পরিণত হয়েছে। তাদের সামনে দাঁড়িয়ে ভারতীয় সেনা বাহিনীর পর্যায়ভূক্ত সেনার দল—মুখে তাদের এক বাণী— দিল্লী চলো।

 বৃটিশের ধাপ্পাবাজীতে, ইচ্ছাকৃত লুণ্ঠন ও দুর্ভিক্ষের মহামারীতে ভারতবাসীরা মরীয়া হয়ে উঠেছে এবং বৃটিশজাতি ভারতের সমস্ত শুভেচ্ছা হারিয়ে এখন ত্রিশঙ্কুর অবস্থায় অবস্থান করছে। এই অশান্তি ও অরাজকতাকে উচ্ছেদ করতে মাত্র একটি স্ফুলিঙ্গের প্রয়োজন। ভারতীয় মুক্তি সেনার কর্তব্য সেই স্ফুলিঙ্গ জ্বালিয়ে দেওয়া। দেশের বেসামরিক জনসাধারণের এবং বৃটিশের ভারতীয় সেনা বাহিনীর এক বিরাট অংশের উৎসাহে আশান্বিত হয়ে এবং বিদেশের অজেয় বীর মিত্রশক্তির সাহচর্যে—কিন্তু সবার উপর আত্মশক্তির ওপর বিশ্বাস বেখে ভারতীয় মুক্তি সেনা এই ঐতিহাসিক কর্তব্য সম্পাদনে অস্থাবান।

 বর্তমানে স্বাধীনতার প্রথম প্রভাত যখন অতি নিকটে তখন ভারতবাসীর উচিৎ একটা সাময়িক স্বাধীন শাসনতন্ত্র গঠন করে তারই পতাকাতলে স্বাধীনতার শেষ সংগ্রাম শুরু করে দেওয়া। কিন্তু সমস্ত নেতারা যখন কারারুদ্ধ, দেশবাসী যখন সম্পূর্ণ নিরস্ত্র, তখন দেশেব মধ্যে এই স্বাধীন রাষ্ট্র গঠন করা কিংবা তারই অধীনে সশস্ত্র সংগ্রাম চালানো সম্ভব নয়। সুতরাং দেশে এবং বিদেশে সমস্ত ভারতবাসীর দ্বারা উৎসাহিত পূর্ব এশিয়ার এই ভারতীয় স্বাধীনতা সঙ্ঘের কর্তব্য হল একটি স্বাধীন ভারতীয গভর্ণমেণ্ট স্থাপন করা এবং এই সঙ্ঘ পরিচালিত ভারতীয় মুক্তি সেনার (অর্থাৎ আজাদ হিন্দ ফৌজ বা Indian National Army) সাহায্যে স্বাধীনতার শেষ সংগ্রাম শুরু করে দেওয়া।

 পূর্ব এশিয়ার স্বাধীনতা সঙ্ঘ প্রতিষ্ঠিত সাময়িক স্বাধীন ভারতের গভর্ণমেণ্ট হিসেবে গঠিত হয়ে, আমাদের ওপর ন্যস্ত সমস্ত গুরু দায়িত্ব সম্বন্ধে সচেতন হয়েই

১০৬