পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/১৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

আজাদ-হিন্দ-সরকারের এবং বিশেষ করে নেতাজীর সঙ্গে জাপানীদের কি সম্বন্ধ ছিল সেটা বিশেষ প্রণিধানযোগ্য। পাশ্চাত্যদেশে জেনারেল দ্যগল এবং মার্শাল টিটোর বীরত্ব কাহিনী এবং দেশপ্রেমের ভূয়সী প্রশংসা শোনা যায় বৃটিশের মুখে বৃটিশের বন্ধু আমেরিকার মুখে। অথচ তারাই বলে নেতাজী নাকি দেশদ্রোহী, ফিফ্‌থ কলমিষ্ট, জাপানী এজেণ্ট ইত্যাদি। এদের এই মিথ্যা অতিরঞ্জিত ব্যাপক প্রচারকার্যের ফলে আমাদেরও অনেকের মধ্যে ধারণা হয়েছিল যে নেতাজী দেশের স্বাধীনতার জন্য সংগ্রাম করলেও তিনি নিশ্চয় জাপানীদের অধীনেই তা করছেন। কিন্তু এই ধারণা যে কতবড় ভুল এবং নেতাজী জাপানীদের অধীনে সংগ্রাম করা ত দূরের কথা জাপানী শ্রেষ্ঠ নেতাদের সঙ্গে একইভাবে কতখানি সম্মান যে পেয়ে এসেছেন তার সত্য বিবরণী পাঠ করলে বিস্ময়ে স্তব্ধ হয়ে যেতে হয়। শুধু জাপান কেন, জার্মানীও তাঁকে স্বাধীন রাষ্ট্রের সর্বাধিনায়ক হিসাবে ন্যায্য সম্মানের অধিকারী করেছে। মার্শাল টিটো বা জেনারেল দ্যগলের সঙ্গে তাঁর কোনও রকম তুলনা চলে না। তাঁরা মিত্রশক্তির সাহায্যে হৃত স্বাধীনতাকে পুনরায় উদ্ধার করতে চেষ্টা করেছিলেন আর নেতাজী এক স্বাধীন রাষ্ট্রের সর্বাধিনায়ক হিসাবে সংগ্রাম চালিয়েছেন সাম্রাজ্যবাদী বৃটিশের সঙ্গে, সমগ্র ভারতের স্বাধীনতার জন্যে। যদি তুলনাই করতে হয় তাহলে ইটালীর গ্যারিবল্ডী, আমেরিকার জর্জ-ওয়াশিংটন এবং রাশিয়ার লেনিনের নামই করা যেতে পারে। তবে প্রভেদ এই যে তাঁরা তাঁদের কার্যে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন আর ভারতের সে শুভদিন আসতে আর কিছুদিন দেরী মাত্র! তবে এ শুধু কল্পনার কথা নয় নেতাজী জাপানীদের কাছ থেকে কতখানি সম্মান যে পেয়েছিলেন তার আংশিক প্রমাণ পাওয়া যায় নিম্নলিখিত পত্রালাপের মধ্য থেকে।

আজাদ-হিন্দ-ফৌজ হুকুমনামা

লেঃ কঃ হাবিব-উর-রহমান, সরকারী প্রধান কর্মকর্তা

 ব্রহ্মদেশ
নং ১৩ দল
৫, ৯, ৪৪, 

১২৫