পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/১৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সঙ্গে! বোম্বাই সহরে মণিভবনে গান্ধীজীর সঙ্গে সুভাষের এক ঘণ্টারও বেশী সময় আলোচনা চললো তার ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা সম্বন্ধে। অনেক কিছু জিজ্ঞাসা করবার, অনেক কিছু বোঝবার ছিল তার। গান্ধীজী তখন ভারতের একছত্র নেতা। তার আবির্ভাবে নতুন এক দ্বার খুলে গেছে স্বাধীনতার যুদ্ধের। নতুন পথ। সুভাষচন্দ্রের সেই পথ সম্বন্ধে অনেক কিছু পরিষ্কার করে বোঝাবার ছিল। কিন্তু অনেক আশা নিয়ে এলেও কথাবার্তার পর তিনি যখন বেরিয়ে এলেন গান্ধীজীর কাছ থেকে, তখন দেখা গেল তিনি হতাশ হয়েছেন। গান্ধীজীর উত্তরে তার মন আশ্বস্ত হয় নি একেবারে।

 সুভাষচন্দ্র ফিরে এলেন কোলকাতায়। ফিরে এসে দেখা করলেন দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের সঙ্গে। দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন তখন ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ নেতা, শ্রেষ্ঠ রাজনৈতিক বীর। ভারতের মুক্তি সংগ্রামের একমাত্র জ্বলন্ত প্রতীক। বাংলার মুকুটহীন সম্রাট! তাই সুভাষচন্দ্র গান্ধীজীর কাছে হতাশ হয়ে দেখা করতে এলেন দেশবন্ধুর সঙ্গে। তরঙ্গমুখর নদী মোহনার মুখে এসে সাগরের সম্মুখে হাত পেতে দাড়ালো! চির যুবক দেশবন্ধু এই বিপ্লবী যুবকের দিকে হাত বাড়িয়ে দিলেন।

 এই মিলনের প্রয়োজন ছিল। কারণ গান্ধীজীর মতের সঙ্গে যখন সুভাষের মিল হল না তখন একমাত্র দেশবন্ধু ছাড়া আর এমন কোন লোক তখন ছিলেন যিনি সুভাষের মত বীরকে চালনা করতে পারেন। অবশ্য গান্ধীজীর মতবাদ তখন সারা ভারতবর্ষে যথেষ্ট প্রভাব বিস্তার করেছে কিন্তু বাঙ্গলাদেশে দেশবন্ধুর আদর্শই একমাত্র আদর্শ। তাছাড়া সুভাষচন্দ্র নিজে বলেছেন যে গান্ধীজীর কথাবার্তা তাকে সন্তুষ্ট করতে পারে নি। তার মনে হয়েছে গান্ধীজীর কর্মপন্থা যথেষ্ট নিদিষ্ট নয়। তার মধ্যে অনেক অস্পষ্টতা আছে এবং যার ফলে সেই পথে ভারত তার লক্ষ্যস্থলে পৌছতে পারবে না।

 কিন্তু দেশবন্ধুর আদর্শে তিনি সম্পূর্ণ অভিভূত হয়ে পড়লেন। তার মন অন্তর

১১