পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/১৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কোমর-বন্ধনী উপহার দেন। তিনি বলেন নেতাজী স্বয়ং সাধারণ সৈনিকের মত সৈনিকদের সঙ্গে সাজসজ্জা খাওয়া থাকা করতেন। সম্মুখ সমরে নিজে উপস্থিত থেকে সৈনিকদের উৎসাহ দিতেন। বোমাবর্ষণের সময় সৈনিকরা আশ্রয় না নেওয়া পর্যন্ত নিজে আশ্রয় গ্রহণ করতেন না। নেতাজী বিমানপথে বাংলা ও আসামের সহরের ওপরে দিয়ে উড়ে গেছেন। বোমাবর্ষণের তিক্ত অভিজ্ঞতার জন্য তিনি জাপানীদের ভারতবর্ষে নিরীহ জনসাধারণের ওপর বোমাবর্ষণ করার থেকে নিরস্ত রাখেন। তাছাড়া যুদ্ধক্ষেত্রেও ভারতীয় সৈনিকদের (বৃটিশ বাহিনীর) যথাসম্ভব বাঁচিয়ে গুলি বর্ষণের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

 বিক্রম সিং—উদয়পুর নিবাসী ভারতীয় জাতীয় সেনা বাহিনীর এই সৈনিক বলেন যে কোলকাতায় বোমাবর্ষণের পর একখানি চিত্র নেতাজীর হস্তগত হয়। ঐ চিত্রখানি কয়েক মিনিট স্তব্ধ দৃষ্টিতে দেখার পর নেতাজীর মন এতই বিচলিত হযে ওঠে যে তিনি জাপানীদের বাংলা ও আসামে অযথা বোমা নিক্ষেপ না করতে আদেশ দেন।

 মেজর হাকিমজী—আজাদ হিন্দ সরকারের শ্যাম বেতার কেন্দ্রের প্রচাবকর্তা এই ভদ্রলোক সম্প্রতি বলেছেন যে আজাদ হিন্দ সরকার বৃটিশের বন্ধু রাশিয়া ও চীন দেশের প্রতি নিরপেক্ষ মনোভাব পোষণ করতেন। এক সাংবাদিক সম্মেলনে নেতাজী বলেছিলেন যে, চীনের প্রতি তাঁর যথেষ্ট সহানুভূতি আছে। কারণ ভারত ও চীনের উদ্দেশ্যের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই। উভয়েই পরাধীনতার শৃঙ্খল থেকে বিমুক্ত হবার সংগ্রামে লিপ্ত।

 মিঃ হাসতান—ইনি ফ্রীস ইণ্ডিয়েন বা জার্মানীস্থ ভারতীয় সেনা বাহিনীর একজন অন্যতম বিশিষ্ট সামরিক কর্মচারী ছিলেন। ইনি নেতাজীর সঙ্গে জার্মানী থেকে জাপানে আগমন করেন। এই ফ্রীস ইণ্ডিয়েনের আরও কয়েকজন বীর সৈনিকের নাম— জামিল খান, আলী খান, ডাঃ ইশাক, ওরবাচান সিং, ডাঃ পটনেকার ও গুরুমুখ সিং। এঁদের বাহিনীর সংখ্যা ছিল ৩৫০০— ১৫টি দলে বিভক্ত।

১৪৭