পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/১৫৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 খাওয়াজ আলী—এঁর দেশ রাওয়াল পিণ্ডি। তিনি জার্মানীতে আজাদ হিন্দ ফৌজের সঙ্গে ছিলেন। ৮ই মে ১৯৪৫ পর্যন্ত তিনি জার্মানীতে ছিলেন এবং জার্মানীকে আত্মসমর্পণ করতে স্বচক্ষে দেখেছেন। আত্মসমর্পণের পর জার্মানীরা আজাদী ফৌজকে জার্মাণী পরিত্যাগ করতে আদেশ দেয় নতুবা দ্যগলের সৈন্যদের হাতে নিহত হবে বলে ভয় দেখায়। কিছুদিন আত্মরক্ষা করে থাকবার পরও তাঁরা দ্যগলের সৈন্যদের কবলে পড়েন। তখন খাওয়াজ আলি দ্যগলকে জার্মানদের পরাজিত করার জন্য সম্বর্ধনা জানিয়ে এক পত্র লেখেন এবং সে পত্রে আরও জানান যে আসলে আজাদী ফৌজ বৃটিশেরই তথা মিত্র শক্তিরই অনুগামী, জার্মানদের অত্যাচারে অতীষ্ঠ হয়েই তাদের দলে যোগ দিয়েছে ইত্যাদি।····এই ধাপ্পার সাহায্যে তাঁরা মুক্তি পান।

 আনন্দমোহন সহায়— আজাদ হিন্দ মন্ত্রিসভার সাধারণ সম্পাদক আনন্দমোহন সহায় ভাগলপুরে পুরানিসরাই গ্রামে এক দরিদ্র কায়স্থ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতার নাম মুন্সী লালমোহন সহায়। আনন্দমোহন দেশবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯২০ সালের স্বদেশী আন্দোলনে আত্মনিয়োগ করেন এবং এক সময়ে রাজেন্দ্রপ্রসাদের প্রধান মুন্সীরূপে নিযুক্ত ছিলেন।

 আনন্দমোহন আবাল্য দুঃসাহসী। এবং একবার গোপনে কোলকাতার এক সিন্ধী বণিকের সঙ্গে তিনি জাপানে পালিয়ে যান। পরে অবশ্য তাঁর ছোট ভাই সত্য দেও তাঁর সঙ্গে জাপানে গিয়ে যোগ দেন। যাই হোক এই জাপানে আসার ফলেই আনন্দমোহন বিপ্লবের মধ্যে জড়িয়ে পড়েন। এই বিপ্লবের গুরু স্বনাম খ্যাত রাসবিহারী বসু। প্রকৃত পক্ষে এঁরা দুজনেই বিদেশে ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের সূত্রপাত করেন। বলা বাহুল্য বৃটিশ গোয়েন্দা তাঁকে উত্যক্ত করে তোলে। তিনি অল্প সময়ের মধ্যেই বক্তা লেখক ও সাংবাদিকরূপে বিশেষ পরিচিত হয়ে ওঠেন। ১৯২৮ সালে আনন্দমোহন কোলকাতায় এসে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জনের ভগ্নী ঊর্মিলা দেবীর সপত্নী-কন্যা শ্রীমতী

১৪৮