পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/১৭৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

প্রশস্ত স্থান। একমাত্র রাশিয়াই ভারতকে মুক্ত করতে পারে। এই যুদ্ধই হচ্ছে তার শুভক্ষণ। এই শুভক্ষণের সুযোগ সদ্ব্যবহার না করতে পারলে ভারতের স্বাধীনতা আরও পঞ্চাশ বছর পেছিয়ে যাবে। উত্তমচাঁদ বলেন যে জার্মানী বা চক্রশক্তির অনুকূলে সুভাষবাবু একটা কথাও বলেন নি। চক্রশক্তিকে তিনি ইংরাজের মতই ঘৃণা করতেন। অথচ তিনি বলেছেন যে ভারতবর্ষ স্বাধীন হলে বছর কুড়ি ধরে একজন শক্তিশালী ডিক্টেটরের অধীনে শাসিত হওয়ার প্রয়োজন আছে কারণ তা না হলে ভারতবর্ষের ভেতরকার নানা রকম বিভেদ দূর হতে পারে না। তিনি বলেছিলেন তুরস্কের মত ভারতবর্ষেও কামাল পাশার মত একজন নেতার প্রয়োজন। রাশিয়ায় যাবার আন্তরিক ইচ্ছা ও চেষ্টা থাকা সত্বেও রাশিয়া ও জার্মাণীর মধ্যে যুদ্ধ বেধে যাওয়ায় তা অবশ্য সম্ভব হয় নি। তাই তিনি বাধ্য হয়েই বার্লিন যাত্রা করেন।

 সুভাষবাবুর মস্কোতে যাওয়ার ব্যগ্রতা দেখে উত্তমচাঁদও নানারকম উপায়ের সন্ধান করতে লাগলেন। রাশিয়ার সীমান্ত থেকে একজন ফেরার খুনী আফগানিস্থানে এসে বাস করছিল, উত্তমচাঁদ তাকে চিনতেন। আকগানিস্থান ও রাশিয়ার মধ্যে রয়েছে হ্যাংগো নদী, এই নদী পার হতে পারলেই রাশিয়া যাওয়া যায়। অনেকে এই নদী দিয়ে গোপনে চোরাই মাল পারাপারের কারবার করতো এবং ঐ খুনী লোকটা ওদের সঙ্গে যুক্ত ছিল। লোকটার আর্থিক অভাবও ছিল প্রচুর। এই লোকটিই সাতশো আফগানী টাকার বিনিময়ে সুভাষবাবুকে ও রহমৎ খাঁকে হ্যাংগো নদী পার করে রাশিয়ায় পৌঁছে দিতে রাজী হয়। এই লোকটির নাম ‘ম’।

 উত্তমচাঁদ রহমৎ খাঁর সঙ্গে ম’র পরিচয় করিয়ে দিলেন এবং তাঁরা সব ব্যবস্থা করতে লাগলেন। ইতিমধ্যে কারোনির স্ত্রী এসে জানিয়ে গেলেন যে শীঘ্রই নাকি রোম থেকে সব ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

 এদিকে আবার নতুন বিপদ দেখা দিল। উত্তমচাঁদের এক ব্যবসায়ী বন্ধু

১৬৩