পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/১৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 এই এর পর ইতিহাসবিখ্যাত কংগ্রেসের গয়া অধিবেশন। এবং স্বরাজ পার্টির জন্ম। এই অধিবেশনে সভাপতি ছিলেন চিত্তরঞ্জন দাস। সাধারণ বাৎসরিক অধিবেশন হলেও এই গয়া কংগ্রেসের খুব বেশী রকম গুরত্ব ছিল। সভাতেই স্থির হয় যে কংগ্রেস ব্যবস্থাপক সভায় যোগদান করে সরকারের বিরুদ্ধাচরণ করবে কিনা? চিত্তরঞ্জন জোর দিয়ে ঘোষণা করলেন যে ব্যবস্থাপক সভায় যোগ দিলে কংগ্রেস আরও সহজে তার লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে যাবে, বয়কট করে শুধু অসহযোগ করে সে রকম ফল পাওয়া যাবে না। অর্থাৎ দেখা গেল একদিকে গান্ধীর দল আর অন্যদিকে চিত্তরঞ্জন-সুভাষচন্দ্রের দল। এই ঘরোয়া বিবাদের ফলেই স্বরাজ পার্টির উৎপত্তি। চিত্তরঞ্জনের নেতৃত্বে গঠিত এই দল স্থির করলে যে এইদল কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বীতা করবে। এবং এই দলের মুখপত্র স্বরূপ দেশবন্ধু নৃতন একখানা ইংরাজী দৈনিকপত্র বের করলেন। সেই কাগজের নাম হল ফরওয়ার্ড এবং এই কাগজের ভার পড়লো সুভাষচন্দ্রের ওপর।

 এখানে প্রশ্ন ওঠে সুভাষচন্দ্র গান্ধীজীর বিরুদ্ধে এই স্বতন্ত্র দল গড়ে তুললেন কেন? তার উত্তরে বলা যায় যে বরাবরই তিনি গান্ধীজীর পন্থার ওপর আস্থা রাখতে পারেন নি। উপরন্তু এই অসহযোগ আন্দোলন ব্যর্থ হওয়ার মূলে আছে গান্ধীজীর অস্বাভাবিক রকমের আত্মবিশ্বাস। তিনি হয়ত অন্যান্য নেতাদের মত নিলে ভাল করতেন। তবে একথা সুভাষবাবু বার বার স্বীকার করেছেন যে গান্ধীজীর দান অসামান্য। এবং কংগ্রেসের সমস্ত নেতা বা সাধারণ কর্মী প্রত্যেকেই মাথা নত করে গান্ধীজীর বিরাট ব্যক্তিত্ব শ্রদ্ধাভরে স্বীকার করবে। তবে প্রয়োজনের তাগিদে এমন দিন এসেছে যখন এই স্বরাজ পার্টি গান্ধীজীকে রাজনৈতিক জীবন থেকে স্বেচ্ছায় অবসর গ্রহণ করতে বাধ্য করবে।

 প্রকৃত পক্ষে হলও তাই। সমস্ত প্রদেশে স্বরাজ পার্টি প্রবল ও জনপ্রিয় হয়ে উঠলো। এবং নির্বাচনে দেখা গেল কি কেন্দ্রীয় কি প্রাদেশিক

১৫