পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 মান্দালয়! বৃটিশ বর্বরতার শেষ পরিচয়। যার অন্ধকার কুঠুরীর মধ্যে কত মহাপ্রাণ তিলে তিলে জীবনের শেষ সম্বলটুকু ক্ষয় করে এসেছেন অন্যাযের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের পুরস্বাব স্বরূপ! এই সেই মান্দালয় যেখানে লোকমান্য তিলকের মত লোককে বছরের পর বছর মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যেতে হযেছিল। সুভাষবাবু নিজে লিখেছেন—“কিন্তু, এ বিষয়েও আমার নিশ্চিত ধাবণা যে মান্দালয় জেলে ছ’বছর বন্দী হয়ে থাকাটাই তার অকাল মৃত্যুর কারণ। তব অন্য স্থানে সুভাষবাবু বলেছিলেন, আমার স্পষ্ট মনে পড়ে যে এ সেই স্থান যেখানে তিলককে ছ'বছর কাটাতে হযেছিল আর লাজপত রায়কে এক বছর। এই ভেবেই আমরা সান্তনা পেয়েছিলাম যে যাই হোক আমরা তাদেব পদাঙ্ক অনুসরণ করতে চলেছি, সে বিষয়ে আমরা গর্ব করতে পারি।

 ছাত্রবয়সে তাঁর বিদ্রোহী মনকে শান্ত করবার জন্যে তার অভিভাবকেরা তাকে বিলাত পাঠাতে চেয়েছিলেন। এবং পরে প্রমাণিত হল সে দিক দিযে তাদের ভুল হয়েছে। তবে তার থেকেও বড় ভুল করলেন ভারত সরকার তাকে মান্দালয়ে নির্বাসন দিয়ে। সুভাষবাবু এতদিন একনিষ্ঠ সেবকেব মত দেশবন্ধুকে অনুসরণ করে আসছিলেন। তিনি যে দিক থেকে দেশের মুক্তিব সম্ভাবনা চিন্তা করেছিলেন দেশবন্ধুর আদর্শ ছিল তদ্রুপ। তাই দেশবন্ধুর স্ববাজ পাটিতে কাজ কববার সময় সুভাষচন্দ্র স্বাধীন চিন্তা ও স্বাধীন কর্মপন্থার পরিকল্পনা করবার মত যথেষ্ট অবসর পান নি। কিন্তু মান্দালয় জেলের নির্জনতা তাকে সেই সুযোগ এনে দিল। তিনি নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করলেন।

 প্রথমে জেলে গিয়ে জেলের মধ্যেই তিনি এক আন্দোলন শুরু করে দিয়েছিলেন। তারা চেয়েছিলেন জেলের মধ্যে দুর্গা পূজা করবেন। দুর্গাপূজা বাঙ্গালীর শ্রেষ্ঠ পর্মানুষ্ঠান কাজেই সরকারের বাধা দেওয়ার কোন অর্থ হয় না। কিন্তু তবু তারা যখন অনুমতি পেলেন না তখন তারা অনশন ব্রত সুরু করলেন। এই অনশনের সংবাদ দেশের মধ্যে কি ভাবে যেন ছড়িয়ে

১৮