পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/২৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 এ যেন মানুষ নয়, দেশমাতৃকার চরণে অঞ্জলি বদ্ধ প্রাণের অর্ঘ্য মাত্র।

 বহুদিন পর বহু সরস শ্যামল উর্বর মাঠ পার হয়ে প্রত্যাশিত পুঞ্জ পুঞ্জ কালো মেঘ যখন মরুভূমির ওপরের আকাশকে সমাচ্ছন্ন করে ঘনিয়ে এল, তখন অনেক জল তার মরে গেছে। অনেক মেঘ তার ঘূর্ণি বাতাসে ছিন্ন ভিন্ন হয়ে ছড়িয়ে গেছে। আহত, স্তব্ধ মরুর মাটি তাব হলুদ তৃষ্ণার সমুদ্র নিয়ে চেয়ে রইলো সেই মেঘের পানে নিনিমেষ মিনতি নিয়ে।

 তবু, দু’চার ফোঁটা লেবও প্রয়োজন আছে মরুর বুকে।

 প্রয়োজন আছে ক্ষয়গ্রস্ত সুভাষের সামান্যতম কম প্রচেষ্টার। ‘বন্ধু’হারা বাঙ্গালীর প্রয়োজন আছে সত্যিকারের কল্যাণকামীর!

 আন্দোলন শুরু করে দিলেন সুভাষচন্দ্র। এবারের আন্দোলন কিষাণ মজুর আর ছাত্রদের নিযে। এব আগে কিষাণ-মজুরদেব নিয়ে আন্দোলন করে নি কংগ্রেস। ১৯১৮ সালে মহাত্মাজী অবশ্য আহমেদাবাদে মজুরদের নিয়ে একবার আন্দোলন করবার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু সে আন্দোলন বেশীদিন স্থায়ী হয় নি। তারপর সুভাষবাবুর বন্দীজীবনের সময়ে কমিউনিষ্ট ও এম এন রায়েব দল আন্দোলন চালাবার চেষ্টা কবেছিল বটে কিন্তু সে আন্দোলন ঠিক ভারতের জাতীয় আন্দোলনের সঙ্গে যোগ ছিল না। পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুও কিছুটা আন্দোলন করবার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু তার আলোচনা ও মতবাদ এত জটিল ও সূক্ষ্ম যে সাধারণে তা সহজে গ্রহণ করতে পারেনি। তাই এই সময়ে সুভাষবাবুর প্রয়োজন ছিল। তিনিই প্রথম কংগ্রেসের পতাকাতলে কিষাণ মজুরদের জাতীয়তাবাদে উদ্বুদ্ধ করে তুললেন। দলে দলে তার আন্দোলনে যোগ দিতে লাগল সকলে।

 এই বছর সুভাষবাবু জওহরলাল নেহরুর সঙ্গে কংগ্রেসের যুগ্ম-সম্পাদকরূপে নিযুক্ত হলেন।

 এর পর ১৯২৮ সাল। এই বৎসর লাক্ষ্ণৌতে সর্বদলীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

২৫