পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৩০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

এই অনুষ্ঠানের উদ্দেশ্য ছিল নেহরুর কমিটি অনুমোদিত রিপোর্টটি মেনে নেওয়া। এই রিপোর্টে সুপারিশ করা হয়েছিল যে কংগ্রেসের লক্ষ্য হবে ডোমিনয়ান স্টেটাস বা ঔপনিবেশিক স্বায়ত্তশাসন তবে এর বিরুদ্ধে যে সব দল পূর্ণ স্বাধীনতা দাবী করবেন তারাও তাদের মত অনুযায়ী কংগ্রেসের দলভুক্ত থেকেই কাজ করতে পারবেন। সুভাষচন্দ্র এই নেহরু কমিটির রিপোর্টের বিরুদ্ধে জোর প্রতিবাদ করলেন। তার সঙ্গে এসে দাড়ালেন পণ্ডিত জওহরলাল ও শ্রীনিবাস আয়েঙ্গার। এই তিনজনে যে একটা দল গঠন করলেন তার নাম হল Independence League বা স্বাধীনতা সঙ্ঘ।

 তাছাড়া এই বছরেই সাইমন কমিশন প্রেরিত হয়। কংগ্রেস ঠিক করলেন কৃষ্ণ পতাকা উত্তোলন ও বয়কট দিয়ে তারা দেশব্যাপী প্রতিবাদ জানাবেন এই কমিশনের বিরুদ্ধে। কিন্তু সুভাষচন্দ্র চাইলেন শুধু বয়কট নয়, নিষ্ক্রীয় কর্মপন্থা নয়—এই সুযোগ নিয়ে দেশব্যাপী বিপ্লব শুরু হোক। তিনি গান্ধীজীকে অনুরোধ করলেন সকলের পুরোভাগে দাড়িয়ে এই আন্দোলন পরিচালনা করতে। সুভাষবাবু সেদিন ঠিকই অনুমান করেছিলেন যে এই হচ্ছে বিপ্লব সুরু করার সুবর্ণ সুযোগ। পরবর্তীকালে সেই আন্দোলন ১৯৩০ সালে গান্ধীজী সুরু করেছিলেন কিন্তু সুভাষবাবুর পরামর্শ মত কাজ করতে পারলে ৯২৮ সালেই সেই আন্দোলন শুরু হয়ে যেতে। তাতে আমাদের মুক্তি সংগ্রাম আরও দুই বছরের জন্যও এগিয়ে যেতে পারতো। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে তা হল না। সুভাষবাবু গান্ধীজীর মত পেলেন না। অথচ সেই বছর ক্রমান্বয়ে, মহারাষ্ট্র প্রাদেশিক সম্মেলন, নিখিল-বঙ্গ ছাত্র সম্মেলন, নিখিল-ভারত যুব-কংগ্রেস প্রভৃতি এতগুলো সভা সমিতিতে যোগ দিয়ে বক্তৃতা দিয়ে সুভাষবাবু অনেকটা জনসাধারণের মনের অবস্থা সম্বন্ধে জানতে পেরেছিলেন। তিনি বার বার উপলব্ধি করেছিলেন যে জনসাধারণ আন্দোলনের জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে। তাছাড়া তিনি ঐসময়ে জনসাধারণের সামনে তাঁর নিজস্ব চিন্তাপ্রসূত কর্মপন্থার কথাও ভাল করে তুলে

২৬