পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৩১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ধরেছিলেন। তিনি জানতেন সকলে সে পন্থা গ্রহণ করবে। সেই সময়েই তিনি প্রথম গান্ধীবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেন। তিনি স্পষ্টই বলেছিলেন সক্রিয় কর্মপন্থা চাই, পণ্ডিচেরী আশ্রমের অরবিন্দ ঘোষ এবং সবরমতি আশ্রমের গান্ধীজীব নিচ্ছিয় প্রতিবাদের পন্থা দিয়ে আর চলবে না।

 কিন্তু তবু গান্ধীজী বললেন যে দেশ আন্দোলনের জন্য তৈরী নেই।

 যাই হোক এর পর কোলকাতা কংগ্রেস অধিবেশনের দিন ঘনিয়ে আসছে। কংগ্রেস নেতারা অনুমান করেছিলেন এইখানে হয়ত বামপন্থীদের সঙ্গে সত্যিই বোঝাপাড়া করতে হবে। তাই গান্ধীজী বললেন যে বামপন্থীদের পূর্ণ স্বাধীনতার দাবী মেনে নেওয়া হবে তবে সবটা নয়, তার মধ্যে কিছু পরিবর্তন করতে হবে। কিন্তু সুভাষচন্দ্র বললেন কোনও রকম সত না দিয়েই পূর্ণ স্বাধীনতার দাবী মেনে জওহরলালও খুব জোরালো বক্তৃতা দিয়ে সমর্থন করলেন। ফলে গান্ধীজীর হঁটাই প্রস্তাব ভোটে অগ্রাহ্য হয়ে গেল। গান্ধীজী এবং অন্যান্য কংগ্রেস নেতাবা বামপন্থীদের শক্তি সম্বন্ধে যথেষ্ট সজাগ হয়ে উঠলেন।

 এরপর কথা উঠলে কংগ্রেসের আগামী সভাপতি নির্বাচন নিয়ে। সকলেই বোধ করেছিলেন যে এই সময় এমন একজন সভাপতির প্রয়োজন যিনি দক্ষতা ও বিচক্ষণব সঙ্গে কংগ্রেসের মধ্যে এই দলাদলির মীমাংসা করতে পারবেন। সেইজন্য গান্ধীজীর নাম প্রস্তাব করা হল। কিন্তু গান্ধীজী এই দায়িত্ব গ্রহণ করতে রাজী হলেন না। কারণ তিনি অত্যন্ত কূটনৈতিক নেতা। তিনি তার দূরদৃষ্টির বলে জানতে পারলেন এই সময়ে পণ্ডিত জওহরলালকে সভাপতি করতে পারলে বামপন্থীদের মধ্যে অনেকটা ভাঙ্গন এসে যাবে। হলও তাই আসলে। সভাপতি নির্বাচিত হবার পর পণ্ডিতজী বামপন্থীদের আদর্শ ত্যাগ করে দক্ষিণপন্থীদের সঙ্গে একটা মিটমাটের চেষ্টা করতে লাগলেন। শুধু তাই নয়, এই ১৯২০ সাল থেকে বরাবর জওহরলাল গান্ধীজীর একনিষ্ঠ অনুগামী হয়ে আছেন।

 ডিসেম্বার মাসে লাহোর অধিবেশন হবার কথা হল। কিন্তু তার আগেই

২৭