পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৩৫

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

না। সুভাষবাবুকে জয়তিলক পরিয়ে সেদিন বাঙ্গলা দেশ এই কথারই কাযত পরিচয় দিয়েছিল। এবং যারা সেই পরিচয় দিয়েছিল তারা আমাদের দেশে অতি সাধারণ শ্রেণীর মানুষ—সেই কিষাণ ও মজুরের দল আর তাদের সাথে সাথে ছিল যুগে যুগে সমস্ত দেশের সমস্ত সংগ্রামের যারা অগ্রদূত সেই তরুণ ছাত্র সম্প্রদায়। সুভাষবাবুর জয় বাঙ্গালীর প্রাণের জয়।

 এর পর ১৯৩০ সাল। অসহযোগ আন্দোলনের পুনরাবৃত্তি। প্রতি বাবে যেমন হয়ে থাকে এবারেও বাঙ্গলা দেশ সুভাষবাবুর নেতৃত্বে এগিয়ে এলো। আন্দোলনের পুরোভাগে। সুভাষবাবু, যতীন্দ্রমোহন প্রভৃতি সকলেই কারারুদ্ধ হলেন। এই সময় আলীপুর জেলে ওয়ার্ডারদের অভদ্র ব্যবহারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে পাঠান বক্ষীদেব হাতে সুভাষবাবু তার সঙ্গীদের নিয়ে লাঞ্ছিত হলেন। লাঠির আঘাতে এক ঘণ্টারও বেশী সময় তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েছিলেন। বিক্ষোভের বঙ্গে সমস্ত দেশ উদ্বেল হয়ে উঠলো। থেকে ব্যাপারটা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল কিন্তু সফল হল না। দেশব্যাপী প্রতিবাদ ও প্রতিকারের দাবী জানিয়ে আন্দোলন চলতে লাগলো। সমযের মধ্যেই আবার কোলকাতার অধিবাসী সুভাষবাবুকে মেয়র নির্বাচিত সরকার করলেন।

 কিছুদিনের জন্য তিনি মুক্তি লাভ করলেন এবং এই সময়ে মজুরদের পক্ষ থেকে তিনি নিখিল ভাবত ট্রেড ইউনিয়ন কংগ্রেসের সভাপতি নির্বাচিত হলেন। কিন্তু বেশীদিন আর জেলের বাইরে তার থাকা হল না। ২৮শে জানুয়ারী স্বাধীনতা দিবসের এক শোভাযাত্রা পরিচালনা করতে গিয়ে তিনি গ্রেপ্তার হলেন। শুধু গ্রেপ্তার নয়, শোভাযাত্রার ওপর পুলিশ লাঠি চালনা করায় অনেকের সঙ্গে তিনিও আহত হয়েছিলেন। কিন্তু এবারেও তাকে বেশীদিন জেলে থাকতে হয় নি। কারণ এই সময় জগৎ বিখ্যাত গান্ধী আইন চুক্তি সম্পাদিত হয়, এবং তার ফলে তিনি মুক্তিলাভ করেন।

৩১