পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৩৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

কিন্তু বোম্বাইতে যাবামাত্র তিনি গ্রেপ্তার হলেন। একেই ত মান্দালয় জেলে তার শরীরে যক্ষ্মার পূর্বাভাস দেখা গিয়েছিল, এবারে জেলের মধ্যে তার শরীর একেবারে ভেঙ্গে গেল। কর্তৃপক্ষ চিকিৎসার জন্য তাকে ইউরোপে পাঠাবার সঙ্কল্পে ১৯৩৩ সালে তাকে মুক্তি দিলেন। তবে এই সতরইলো যে সরাসরি জেল থেকেই তাকে ইউরোপ যাত্রা করতে হবে, মধ্যে আত্মীয়স্বজনদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না।


জীবনের ধারা

(২)

 দুই ধরণের নদী আছে। এক ধরণের নদী যতটুকু শক্তি পায় উংসের গর্ত থেকে ঠিক ততটুকু শক্তি নিয়েই এগিয়ে চলে। চলতে চলতে যখন নিজের প্রাণের জোর আসে ফুরিয়ে তখন কাছাকাছি একটা বড় নদীর বুকের মধ্যে ঝাপিয়ে পড়ে বিকিয়ে দেয় নিজের স্বকীয় ধারাকে! এবং সেই বৃহৎ নদীর প্রবাহের সঙ্গে এক হয়ে কোনওগতিকে যখন সাগরের মোহনায় এসে পৌছায় তখন তার উদ্দেশ্য সিদ্ধ হয় বটে কিন্তু অনাব সত্বাকে জাগ্রত রেখে নয়। কিংবা এমনও কোন কোন নদী আছে যারা হাতের কাছে আত্মসমর্পণ করবার মত কোন বড় নদী না পেয়ে পথে যেতে যেতেই খানিকটা ব্যাপ্তির মাঝে মুখ লুকিয়ে চিরকালের মত থমকে দাড়িয়ে যায়।

 আর এক ধরণের নদী আছে, যে না সাগরের মোহনা পর্যন্ত না পৌছে আপনাকে হারাতে পারে না। যতদূর হোক, যত দুস্তর সে পথ হোক তবু সে আসবে, আপনার উন্মত্ত জীবন-প্রবাহে প্রধাবিত হয়ে আসবে সাগরের আশে।

৩৩