পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৪৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

একমাত্র কর্ণধার! তাহলে গান্ধীজীর প্রভাব কি একেবারেই খর্ব হয়ে গেল? না, কথাটা অত সহজেই উড়িয়ে দেবার মত নয়।

 গান্ধীজী প্রত্যক্ষভাবে কংগ্রেসের সংশ্রব ত্যাগ করলেও সবার পশ্চাতে ধ্রুবতারকার মত উজ্জ্বল ও একদর্শী হয়ে পথ নির্দেশ করছেন। তাঁর তিনটি প্রধান সহায় সর্দার প্যাটেল, মৌলানা আজাদ এবং রাজেন্দ্রপ্রসাদ! সর্দার প্যাটেল কংগ্রেসের সভাপতি এবং সর্বেসবা—প্রকৃতপক্ষে ডিমোক্রাসীর পরিবর্তে কংগ্রেস প্যাটেলের ডিক্টেটরশিপ বা একাধিপত্যের অধীনে পরিচালিত হচ্ছে। সেদিক থেকে প্যাটলের জনসাধারণকে চালনা করবার ও তাদের ওপর কর্তৃত্ব করার একটা অদ্ভুত ক্ষমতা আছে এ কথা সকলেই স্বীকার করবে। কংগ্রেসের অবস্থা তখন অনেকটা জার্মানীর নাৎসী পার্টির মতই। এখানেও ডিক্টেটরশিপের পূর্বাভাষ দেখা দিচ্ছে। মুখে গণতন্ত্রের বুলি আওড়ালেও কার্যতঃ কংগ্রেসের ক্রিয়াকলাপ বিপরীত দিকে চলতে বসেছে। তাই একথা নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে সুভাষবাবুকে ফ্যাসিষ্টপন্থী বলে তাঁর মতবাদকে যে ডিক্টেটরশিপের জয়গান বলে কংগ্রেস মিথ্য। আক্রমণ করবার চেষ্টা করছে কংগ্রেস অপর দিকে পরোক্ষভাবে সেই ডিক্টেটরশিপের দিকেই এগিয়ে চলেছে।

 গান্ধী-অনুপ্রাণিত কংগ্রেসের এই দলীয় প্রভাব খুব শক্তিশালী হয়ে উঠলেও কংগ্রেস সোশ্যালিষ্ট পার্টি বা সমাজতান্ত্রিক কংগ্রেস দলের ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয়তা একেবারে অগ্রাহ্য করবার মত নয়। সুভাষবাবু যদিও সকল বিষয়ে এদের সঙ্গে একমত ছিলেন না তবু তিনি লিখেছিলেন, বর্তমানে সমাজ তান্ত্রিক দল যে পন্থা অবলম্বন করছে তাতে তারা বিশেষ অগ্রসর হতে পারবে না। দলের সংগঠন বিসদৃশ উপদানের সংমিশ্রন মাত্র এবং কয়েকটা মত আবার একালের উপযুক্ত নয়। কিন্তু এই দল গঠনের মূলে আছে যে প্রেরণা তা সম্পূর্ণ যুক্তি সঙ্গত। এই বামপন্থী দল থেকেই পরিশেষে এমন একটি নতুন পূর্ণবিকশিত দল বেরিয়ে আসবে যার স্পষ্ট আদর্শ এবং নির্দিষ্ট কর্মসূচী ও পদ্ধতি জানা আছে।...তবে তাদের

৪২