পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৪৯

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সাহায্য করবার মত অনেক লোকের সাহচর্য থেকে তারা এখন বঞ্চিত। যখন তাদের সাহচর্য তারা পাবে তখন তারা আরও প্রবল ভাবে অগ্রসর হতে পারবে।

 পরবর্তীকালে, সুভাষবাবু সম্পূর্ণ মুক্তি পাবার পর (১৯৩৭) থেকে এই সমাজ তান্ত্রিক দল আদর্শের দিক থেকে অনেক বিষয়ে পরস্পর বিরোধী হলেও সুভাষবাবুর সঙ্গে সাহচর্য বজায় রেখে চলেছিল। বস্তুত পক্ষে এই সমাজতান্ত্রিক দলের নেতারা—যথা, জয়প্রকাশ নারায়ণ, নরেন্দ্র দত্ত প্রভৃতি—কখনও সুভাষবাবু আবার কখনও জওহরলালের পথ অনুসরণ করে আসছেন।

 দেখা যাচ্ছে সুভাষবাবু কংগ্রেস হাই কমাণ্ডকে যতদূর আক্রমণ করেছেন তার তুলনায় সমাজতান্ত্রিক দলকে একটু যেন সমর্থনই করে আসছিলেন। কিন্তু কমিউনিজমের বিরুদ্ধে তিনি রীতিমত বিষোদ্গার করে এসেছেন। তিনি যুক্তির পর যুক্তি দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন কেন কমিউনিজম আমাদের দেশে চলতে পাবে না। যথা—(১) কমিউনিজমের মধ্যে জাতীয়তাবাদের সমর্থন নেই। অথচ ভারতবর্ষের স্বাধীনতা যুদ্ধের আদর্শ জাতীয়তাবাদ। (২) বর্তমান সময়ে রাশিয়ার সর্বদেশীয় বিপ্লবের কোন চেষ্টা নেই বরং সে ধনতন্ত্রবাদ রাজ্যদের সঙ্গে চুক্তি করছে আদান প্রদান করছে। (৩) ভারতবর্ষে ধর্মের সঙ্গে বিরোধিতা অসম্ভব। রাশিয়ায় অধার্মিকতা ও নাস্তিকতা যে রকম বিস্তার লাভ করছে ভারতবর্ষে সেরকমটা আশা করা যুক্তি সঙ্গত নয়। (৪) যদিও এক শ্রেণীর লোক ভারতে কমিউনিষ্ট প্রচারিত অর্থনৈতিক ব্যবস্থার ওপর বিশ্বাস করবে তবু আর সকলে এমন কি এই শ্রেণীর লোকেরাও বস্তুতন্ত্রবাদকে সমর্থন করতে পারবে না। (৫) যদিও পরিকল্পনাদি অর্থনৈতিক ব্যাপারে কমিউনিজম যথেষ্ট পারদর্শিতা দেখিয়েছে তবু মুদ্রা সংক্রান্ত বিষয়ে তা মোটেই কোন নতুন পথের ইঙ্গিত দিতে পারে নি যাতে এ বিষয়ে সুব্যবস্থা হতে পারে।

 সুভাষবাবুর কমিউনিজমের বিরুদ্ধে এই সব মতামতের ফলে ইং ১৯৩৫ সালের সেপ্টেম্বর মাসের অধিবেশনে কমিনটার্ণ সমস্ত জগতের কমিউনিষ্ট দলদের

৪৩