পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৫০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

এই জাতীয়তাবাদী বুর্জোয়াদের বিরুদ্ধাচরণ করতে আদেশ দেয়। এর ফলে কংগ্রেসের মধ্যেও কমিউনিষ্টদের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া শুরু হয়। কিন্তু, সে কথা বর্তমানে অবান্তর।

 সুভাষবাবুর ইউরোপে থাকাকালীন তাঁর জীবনে দুটি দুর্যোগ ঘটে। প্রথম হল তাঁর প্রবাসজীবনের শ্রেষ্ঠ বন্ধু ও সহায়ক বিঠলভাই প্যাটলের পরলোক গমন। গোড়া থেকেই তাঁর শরীর অসুস্থ ছিল তারপর ১৯৩৩ সালের মাঝামাঝি তিনি পরলোক গমন করেন। তাঁর মৃতদেহ ভারতে পাঠানো হয়। সুভাষবাবু মার্সেল্‌স্ বন্দর পর্যন্ত মৃতদেহের সঙ্গে সঙ্গে ছিলেন।

 দ্বিতীয় দুর্যোগ সুভাষবাবুর পিতৃবিয়োগ। অসুখের সংবাদ পেয়েই তিনি কোলকাতা যাত্রা করলেন। ঠিক যেদিন তিনি এসে পৌঁছলেন সেদিনই তাঁর বাবা শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করলেন। তিনি তাঁর বাবার শেষকৃত্যে যোগ দিতে পেরেছিলেন শেষ পর্যন্ত। শ্রাদ্ধাদি করবার জন্যে তিনি একমাস এখানে থাকবার অনুমতি চেয়েছিলেন কিন্তু এক সপ্তাহের বেশী তাঁকে থাকতে দেওয়া হোল না। তাও এই সাতদিন কড়া পুলিশ নজরে তাঁকে থাকতে হয়েছিল। তবু তিনি লিখেছিলেন, ‘বিদেশে স্বাধীনভাবে বিচরণ করার চেয়ে দেশে আবদ্ধ থাকা অনেক ভাল।’ কিন্তু তবু তাঁকে রাখা হল না। যাবার আগে সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলে গেলেন, দেশে এখন রাজনৈতিক পঙ্কিলতা চলছে, আমাদের সমস্যা এখন জনসাধারণের মনে অনুপ্রেরণা চির জাগ্রত রাখা।

 কোলকাতা থেকে ফিরে তিনি রোমে কিছুদিন ছিলেন। এই রোমে থাকবার সময় তাঁর মনের মধ্যে আবার একটা পরিবর্তন আসে, আবার একটা প্রচণ্ড শক্তিব উৎসদ্বার খুলে যায়। তিনি রোমে মুসোলিনীর সংস্পর্শে আসেন এবং তাঁর কর্মপদ্ধতি, শৃঙ্খলা ও শাসন ব্যবস্থা দেখে মুগ্ধ হন! মুসোলিনীর রোম সাম্রাজ্যের স্বপ্ন ইটালীর তরুণ সম্প্রদায়ের মনে দোলা জাগিয়েছিল। তরুণের সম্রাট সুভাষচন্দ্র এই বিরাট পরিকল্পনায় যে অভিভূত হবেন তাতে আশ্চর্য হবার

88