পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

একনিষ্ঠ দেশপ্রেমিককে অপমান করে বের করে দিতে হবে ভারতের শ্রেষ্ঠ জাতীয় প্রতিষ্ঠান—কংগ্রেসের থেকে?

 এবং তারপর এই লাঞ্ছিত সূর্য কোন মহাদুর্যোগের সাগরপার থেকে সমস্ত জগতের সামনে ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ ও একমাত্র নেতারূপে আবার ভাস্বর হয়ে উঠবে। কোন দলগত সভাপতিত্বের হাত বদল নয়—কোন মিটিং করে নেতৃত্ব গ্রহণ নয়—প্রতি ভারতবাসীর মনে স্বতঃস্ফূর্ত চেতনার মত একটি নাম উজ্জ্বল হয়ে উঠবে—নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু! তুচ্ছ ৫১ নয় — শুধু ৫১ কেন লক্ষ বলদ-বাহিত রথেও নয়—কোটি কোটি ভারতবাসীর জাগ্রত দেশপ্রেমের উচ্ছসিত ফল্গুধারায় বাহিত—প্রবাহিত হয়ে ফিরবে এই নাম হিমালয় থেকে কুমারীকা পর্যন্ত!

 বিপুল জয়ধ্বনির মধ্যে দাঁড়িয়ে ১৯শে ফেব্রুয়ারী সুভাষবাবু বিঠলনগরের বুকে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করলেন। দিকে দিকে জয়ধ্বনি উঠলো — ‘বঙ্গ-কেশরী কি—জয়’। অভ্যর্থনা সমিতির সভাপতি দরবার গোপাল দাস এবং সর্দার প্যাটেল সুভাষবাবুকে অভ্যর্থনা জানালেন। গোপাল দাস এই মর্মে খুব সুন্দর একটি বক্তৃতা দিয়ে সুভাষবাবুর অসীম ত্যাগ ও অসাধারণ দেশপ্রেমের ভূয়সী প্রশংসা করলেন।

 সভাপতি হিসেবে সুভাষবাবুব সেদিনকার অভিভাষণ বিশেষ আকর্ষণীয় হয়েছিল। তাঁর বক্তৃতার মধ্যে তাঁর নতুন মতবাদের কোন ইঙ্গিত ছিল না এমন কি গান্ধীবাদের পরিবর্তে কোন নতুন দলের উদ্ভবের কোনও সম্ভাবনার কথাও তিনি বলেন নি। কেন না তিনি অনুভব করেছিলেন যে কংগ্রেসের মধ্যে স্পষ্টতঃ কোন রকম দলাদলি করার সময় এখন নয়। তিনি যখন কংগ্রেসের সর্বময় কর্তৃত্ব লাভ করেছেন তখন ধীরে ধীরে তাঁর মতবাদকে কাজের মধ্য দিয়ে প্রকাশ করাই যুক্তিযুক্ত, মৌখিক ঝগড়া-বিবাদের মধ্য দিয়ে নয়।

 প্রথমেই ব্রিটিশের সাম্রাজ্যবাদকে নিন্দা করে তিনি তাঁর বক্তৃতার উদ্বোধন

৫০