পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৫৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

করলেন। তিনি ঘোষণা করলেন, ইংরাজের এই বিরাট সাম্রাজ্য ধ্বংসের মুখে চলেছে। সমগ্র ইংরাজ জাতির মুক্তির পথ সমাজতন্ত্রবাদের ওপর নির্ভর করছে এবং সমাজতন্ত্রবাদ গ্রহণ করতে গেলে সমস্ত সাম্রাজ্যকে স্বাধীনতা দান করতে হবে। ইংরাজের ভবিষ্যৎ, ইতিহাসের অন্যান্য সাম্রাজ্যবাদী জাতিসমূহের ভবিষ্যতেরই পুনরাবৃত্তি মাত্র। পরিত্রাণের পথ নেই। ভারতকেও তার জগতের মধ্যে প্রকৃত আসন গ্রহণ করবার ক্ষমতা দিতে হবে। সে ক্ষমতা বর্তমানের অবস্থার মধ্যে সম্ভব নয়। সে ক্ষমতা আমাদের অর্জন করে নিতে হবে। ভারতের বিপুল জনসাধারণের মধ্যে বিরাট এই জাগ্রত অনুপ্রেরণা ও দেশপ্রেমকে সুনির্দিষ্ট পথের মধ্য দিয়ে পরিচালিত করতে হবে। কিন্তু আমাদেব কি এর জন্যে প্রকৃত-শিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী আছে? তাদের উপযুক্ত ভাবে শিক্ষিত করে তোলবার মত নেতা আছে কি? কেন নেই? কেন আমাদের তরুণ নেতাদের উপযুক্ত শিক্ষা দেবার ব্যবস্থা নেই? এই ব্যবস্থা আমাদের করতে হবে। আধুনিক জগতের রাজনৈতিক দলের যে সমস্ত প্রয়োজন আছে আমাদেরও সেই সব ব্যবস্থা থাকা দরকার। জগতের সমস্ত দেশে তরুণদের এই জাতীয় শিক্ষা দেওয়ার যে ব্যবস্থা আছে আমাদেরও সেই ব্যবস্থা করতে হবে। সেদিক দিয়ে জার্মাণীর কাছ থেকে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি।

 ইউরোপে থাকতে তিনি একটি মাত্র দলের সার্বভৌম কর্তৃত্বের ওপর জোর দিতেন কিন্তু হরিপুরায় তিনি ভিন্ন মত প্রকাশ করলেন। তিনি বললেন, স্বাধীনত লাভ করবার পরও কংগ্রেসের অস্তিত্বের যথেষ্ট প্রয়োজন আছে। তখন কংগ্রেসকে শাসনভার এবং সংস্কার ও পুনর্গঠনের ভার গ্রহণ করতে হবে। যুদ্ধোত্তর ইউরোপে আমরা দেখছি যে, যে দেশে রাজনৈতিক দল বা পার্টি দেশের শাসনভা ও পুনর্গঠনের দায়িত্ব গ্রহণ করেছে সে দেশেই শৃঙ্খলা এবং ক্রমোন্নতি দেখ যাচ্ছে। তবে এইরকম একটি দলের কর্তৃত্বের ফলে দেশের মধ্যে একটি মাত্র দলেরই একাধিপত্য গড়ে ওঠে যেমন জার্মানীতে নাৎসী দলের ব্যাপারে দেখ

৫১