পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৬৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

না করেন তাহলে তাঁরা তার উপর অনাস্থা প্রস্তাব আনবেন, সুভাষ বাবু এতেও বিচলিত হলেন না। তিনি শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে প্রস্তুত আছেন, তবু অন্যায় দাবীর সামনে মাথা হেঁট করতে পারবেন না।

 ফলে, নির্দিষ্ট দিনেই ত্রিপুরীব অধিবেশন শুরু হল। সভাপতিও উপস্থিত হলেন ভগ্নস্বাস্থ্য নিয়ে! এর আগে হরিপুরার কংগ্রেসে যে সভাপতিকে অভূতপূর্ব শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে সাদরে অভ্যর্থনা জানিয়ে আনা হয়েছিল সেই সভাপতিই আজ এক রকম উত্থানশক্তি রহিত অবস্থায় এ্যাম্বুলেন্স যোগে সভাক্ষেত্রে এসে উপস্থিত হলেন। এই দুই দৃশ্য সত্যিকারের দেশপ্রেমিক ভারতবাসীর মনে চিরজাগরূক থাকবে। মিথ্যা আত্মমর্যাদা ও নেতৃত্বের আশঙ্কা মহৎ ব্যক্তিকেও হিংসা ও কূট বুদ্ধির নিম্ন স্তরে নামিয়ে নিয়ে যায়। ত্রিপুরী কংগ্রেস তারই জ্বলন্ত নিদর্শন।

 তা যদি না হত তাহলে যাঁরা সম্পূর্ণভাবে কংগ্রেসের সমস্ত দায়িত্ব সুভাষবাবুর স্কন্ধে চাপিয়ে দিলেন এবং বিনা বাধায় তাঁর নিজস্ব মতামতের উপর নির্ভর করেই কংগ্রেসকে পরিচালনা করবার হুমকি দিলেন তারাই আবার তাঁকে অপদস্থ করবার জন্যে সমবেত হলেন ত্রিপুরী কংগ্রেসে, তাঁদের সমস্ত কূটবুদ্ধিকে জাগ্রত রেখে। নিখিল ভারত কংগ্রেস কমিটির অধিবেশনে গোবিন্দবল্লভ পন্থ এই প্রস্তাব তুললেন যে, এতদিন কংগ্রেস যে গান্ধীবাদের অনুসরণ করে আসছে এই কমিটি সেই গান্ধীবাদের ওপরই পুনর্বার তাদের অবিচলিত শ্রদ্ধা ও নির্ভরতা অর্পণ করছে। এই পদ্ধতির কোন পরিবর্তন তারা মানবে না। বর্তমান পরিস্থিতির কথা চিন্তা করে এই কমিটি মনে করে যে গান্ধীজীর ওপরই কংগ্রেসের নেতৃত্ব অর্পণ করা হোক। সেইজন্য কংগ্রেসের কর্তৃপক্ষ যেন আগামী সভাপতি নির্বাচনে গান্ধীজীর ইচ্ছার ওপরই আশ্রয় করেন।

 এই হল গোবিন্দবল্লভের প্রস্তাবের সারমর্ম। অবশ্য সভাপতি এই প্রস্তাব অগ্রাহ্য করতে পারতেন কিন্তু তিনি তা করলেন না। কোন রকম সংশোধনও

৬১