পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৭৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

ছিলেন ততদিন তিনি এই একই দলের সর্বাধিনায়কত্বের ওপর জোর দিলেও কংগ্রেসের সভাপতি হিসেবে হরিপুরায় তিনি যে বক্তৃতা দিলেন তাতে ভিন্ন সুর শোনা গেল। তিনি বললেন কংগ্রেসের মধ্যে সোশ্যালিষ্ট পার্টি, লেফটিস্ট পার্টি প্রভৃতির স্থান আছে। তাঁর এই মত পরিবর্তনের কারণ এই যে তিনি কংগ্রেসের মধ্যে আসন্ন ভাঙ্গনকে প্রতিহত করবার জন্যে বদ্ধ পরিকর। অথচ, ভাঙ্গন এল বিপক্ষ দিক থেকেই! এবং এই ভাঙ্গনের মধ্য থেকেই যখন ফরওয়ার্ড ব্লকের উৎপত্তি তখন তার মধ্যে যে তাঁর সেই নব-পরিকল্পিত সুরের ধ্বনি আবার শোনা যাবে তাতে সন্দেহ কি?

 ইতিপূর্বেই তরুণ-নেতা হিসাবে অনেকবাবই তিনি কংগ্রেসের অধিবেশনের সঙ্গে সমান্তরাল ভাবে তরুণদের নিয়ে এবং কিষাণ মজুরদের নিয়ে সভা আহ্বান করেছেন অধিবেশন চালিয়েছেন; জনসাধারণের ওপর সেই ক্ষমতা তাঁর বরাবরই ছিল। তার ওপর হরিপুরার অধ্যায়ের পর তিনি যেভাবে ভারতের এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত ভ্রমণ করে বক্তৃতা দিয়ে বেড়াচ্ছিলেন তাতে তাঁর জনপ্রিয়তা অভাবনীয়ভাবে বেড়ে গিয়েছিল। এবং তাঁর বক্তৃতার মধ্যে বামপন্থী দলের মনোভাব যে স্পষ্ট হয়ে উঠতো সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। উপরন্তু তিনি প্রকাশ করে বলেছিলেন যে এই র‍্যাডিক্যাল দলগুলির মধ্যে যারা সোশ্যালিষ্ট পার্টি কিংবা কমিউনিষ্ট পার্টিতে যোগ দিতে রাজী নয় তাদের নিয়ে একটা দল গড়ে তুলতে হবে। এবং এইভাবেই দেশের মধ্যে মার্কসীয় দর্শনের ভিত্তি গড়ে উঠবে।

 ফরওয়ার্ড ব্লক উক্ত মনোভাবের আর একটি অখণ্ড প্রকাশ। যার ফলে এক বছরের মধ্যে সারা ভারতবর্ষ জুড়ে এই দল গড়ে উঠলো এবং বাঙ্গলা দেশে ফরওয়ার্ড ব্লকের শক্তির কাছে কংগ্রেস পঙ্গু হয়ে গেল।

 গোড়ার দিকে সুভাষচন্দ্র সমস্ত বামপন্থী দল যেমন, সোশ্যালিষ্ট, কমিউনিষ্ট, রায় গ্রুপ এবং সুভাষচন্দ্রের বামপন্থী জাতীয়তাবাদী বা লেফটিষ্ট ন্যাশানালিষ্টের

৬৬