পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৭৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নেতৃত্বে বিশ্বাস, এক পার্টির আধিপত্যে আস্থা, সামরিক শৃঙ্খলা ও যুব জাগরণ। এবং তিনি নিজের মুখে বললেন যে তাঁর নীতি ফ্যাসিজম নয় আবার সোশ্যালিজমও নয়—এ দুয়ের অভিনব মিশ্রণ!

 এই দুটি ঘোষণা—একদিকে কংগ্রেস থেকে ফ্যাসিজমের মূলোৎপাটন এবং অন্যদিকে ফ্যাসিজমের সঙ্গে মিশ্রণ করে দল গত নীতির উদ্বর্তন, পরস্পর বিরোধী মনে হলেও এ কথা নিঃসংশয়ে বলা যেতে পারে যে কার্যতঃ তিনি ফ্যাসিষ্ট নন। তাঁর আজীবনের আদর্শ দেশকে এক অদ্ভুত চেতনায় জাগ্রত করে তোলা, দেশের জনসাধারণের মধ্যে সুপ্ত শক্তিকে সামরিক শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে পুনরায় উজ্জীবিত করে তোলা। এই আদর্শকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে গেলে এক নেতার—এক পার্টির কঠোর শাসন ও একাধিপত্যের প্রয়োজন। এবং সেই দিক থেকে বিচার করলে ফরওয়ার্ড ব্লকের মূলনীতির যথেষ্ট যাথার্থ্য আছে। এবং সেইজন্যেই বলি ফরওয়ার্ড ব্লকের উৎপত্তি সুভাষচন্দ্রের স্বরূপ বিকাশের শেষ অধ্যায়!

 অপরদিকে, যদি জনসাধারণকে জাগ্রত করে তোলাই উদ্দেশ্য হয় তাহলে গান্ধীবাদের স্থান কোথায়? বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ মহামানব মহাত্মা গান্ধী প্রবর্তিত অহিংসা মতবাদের কি কোনও মূল্য নেই? বিষয়ের গুরুত্বেব দিক থেকে বিবেচনা করলে এই আলোচনা আমাদের পক্ষে ধৃষ্টতা হলেও এই আলোচনার ব্যর্থ প্রচেষ্টারও একটা মূল্য আছে বলে মনে হয়। তাই এই যুক্তির অবতারণা।

 মহাত্মা গান্ধী এবং সুভাষচন্দ্রের জীবনের রাজনৈতিক আদর্শের তুলনা করতে গেলে—অন্তর্নিহিত মূল বৈষম্যের সঠিক ধারণা করতে গেলে সবচেয়ে সহজ উপায় তাঁদের ধর্মগত জীবনের দিকে একবার দৃষ্টিপাত করা। এঁরা দুজনেই ধর্মে বিশ্বাস করেন। শুধু বিশ্বাস করা নয় ধর্মকেই এঁরা জীবনের মেরুদণ্ড বলে স্বীকার করে

৬৮