পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৭৭

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

নিয়েছেন। আজকের দিনে গান্ধীজী শুধু রাজনৈতিক নেতা নন তিনি ধর্মেরও উপদেষ্টা তেমনি সুভাষচন্দ্রের বৈপ্লবিক জীবনের পশ্চাতে আছে এই ধর্মের প্রতি নিষ্ঠা। নির্জন কারাপ্রাচীরের পশ্চাতে কিংবা মুখর রণক্ষেত্রে সুভাষচন্দ্রেব প্রাত্যহিক জীবনের মধ্যে ভগবানকে স্মরণ এবং ধ্যানধারণার একটা বিশিষ্ট ও নির্দিষ্ট স্থান আছে। এমন কি যে কেহ তাঁর সংস্পর্শে এসেছে, তার নিকট জীবনের আদর্শসম্বন্ধে উপদেশ নিতে এসেছে তিনি তাকে ধর্মের গুরুত্ব উপলব্ধি করিয়ে ছেড়েছেন।

 একদিকে যেমন ধর্ম অন্য দিকে তেমনি ব্রহ্মচর্যের ওপর দুজনেই সমান জোর দিয়েছেন। আজীবন ব্রহ্মচারী থেকে মানুষ কি অমিত বীর্যের অধিকারী হতে পারে শুধু বক্তৃতার মধ্য দিয়ে নয়, নিজের জীবন দিয়ে সুভাষচন্দ্র তা প্রমাণ করে গেছেন। বিবাহের কথা দূরে থাক তিনি কোনদিন কোনও স্ত্রীলোককে মাতৃভাবে বা ভগিনীভাবে ছাড়া অন্য কোন ভাবে চিন্তা পর্যন্ত করেন নি। তাঁকে একবার জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে তিনি বিবাহ করেন নি কেন? তার উত্তবে তিনি বলেছিলেন, যে জীবনে তিনি বিবাহ করবার অবসর পান নি। এবং অন্যত্র এই একই প্রশ্নের উত্তরে একজন জাপানী উচ্চপদস্থ কর্মচারীকে পরিহাস কবে বলেছিলেন, বহুদিন আগেই ভারতবর্ষের সঙ্গে আমার বিবাহ হয়ে গেছে। তিনি একবার লিখেছিলেন, কামজয়ের প্রধান উপায় সকল স্ত্রীলোকের মধ্যে মাতৃরূপ দেখা ও মাতৃভাব আরোপ করা এবং স্ত্রী-মূর্তিতে (যেমন দুর্গা কালী) ভগবানের চিন্তা করা। স্ত্রী-মূর্তিতে ভগবানের বা গুরুর চিন্তা করিলে মানুষ ক্রমশঃ সকল স্ত্রীলোকের মধ্যে ভগবানকে দেখিতে শিখে। সে অবস্থায় পৌঁছিলে মানুষ নিষ্কাম হইয়া যায়। এইজন্য মহাশক্তিকে রূপ দিতে গিয়া আমাদের পূর্ব-পুরুষেরা স্ত্রী-মূর্তি কল্পনা করিয়াছিলেন। ব্যবহারিক জীবনে সকল স্ত্রীলোককে ‘মা’ বলিয়া ভাবিতে ভাবিতে মন ক্রমশঃ পবিত্র ও শুদ্ধ হইয়া যায়।

 অন্যত্র, চরিত্রগঠনের উপযোগিতা সম্বন্ধে লিখেছিলেন,—মানুষের দৈনন্দিন

৬৯