পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৮১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 আমাদের উদ্দেশ্য ছিল ফরওয়ার্ড ব্লকের আদর্শ বা ফিলজফি সম্বন্ধে কিছু জ্ঞান সঞ্চয় করা। কিন্তু আলোচনার খাতিরে আমব। বহুদূরে এসে পৌঁছে গেছি। এখন পুনরায় আমাদের আসলের বক্তব্যের দিকে ফিরে যাওয়া যাক। সুভাষচন্দ্র নিজে ফরওয়ার্ড ব্লকের উদ্দেশ্য সম্বন্ধে যে বিবৃতি দিয়েছিলেন তারই সারাংশটুকুর উল্লেখ করলেই মনে হয় আমাদের উদ্দেশ্য সিদ্ধ হবে। যথা—

 ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস ভারতের মৃত্তিকা-উদ্ভূত এক আন্দোলনের প্রতীক। কংগ্রেসের উন্নতি ও শক্তিবৃদ্ধি আভ্যন্তরীণ তাগিদের ফল; এই আভ্যন্তরীণ তাগিদের ফলেই ফরওয়ার্ড ব্লকের জন্ম হয়েছে। কোন ব্যক্তিগত ব্যাপার কিংবা আকস্মিক ঘটনার ফলে ভারতীয় বাজনীতিতে এই নূতন বস্তুর সৃষ্টি হয় নি। কংগ্রেস তার বিবর্তনের পথে নূতন অবস্থায় প্রবেশ করবে বলে ফরওয়ার্ড ব্লকের আবির্ভাব হয়েছে।··· প্রগতি একপথগামী কিংবা সর্বদা শান্তিপূর্ণ নয়। অনেক সময় বিরোধের মধ্য দিয়েই প্রগতি ঘটে!

 জীবিত কিংবা প্রগতিশীল প্রত্যেক আন্দোলনেই একটা অদৃশ্য বামশাখা বা বিরোধী দল থাকে। সময় হলে এই অদৃশ্য বামশাখা সুস্পষ্ট হয় এবং তার সাহায্যে আন্দোলনের আরও পুষ্টিলাভ এবং উন্নতি ঘটে। অনেক সময় এরূপ ঘটে যে, বামশাখা দক্ষিণ শাখার সঙ্গে আপোস ও সহযোগিতা করে শক্তিসঞ্চয় এবং প্রভাব বিস্তার করে। ভিন্নরূপ অবস্থায় তীব্র মতভেদের সৃষ্টি অপরিহার্য হতে পারে, ঐ মতভেদ সাময়িক ভাবে ব্যথাদায়ক হলেও প্রকৃতপক্ষে প্রগতির সহায়ক। কোনও প্রতিষ্ঠানের উন্নতির পক্ষে বামশাখার পুষ্টি ও আবির্ভাব একান্ত আবশ্যক।···১৯২০ সালে গান্ধীপন্থীরা কংগ্রেসে বামপন্থী ছিলেন; তার মানে এ নয় যে বর্তমান সময়েও তাঁরা বামপন্থী। ইতিহাসের পুনরাবর্তনক্রমে নিশ্চয়ই নতুন এক বামশাখার উদ্ভব হয়ে পরিণামে পূর্বের বামপন্থীদের বিতাড়িত করে দেবে।

 কোলকাতা কংগ্রেসে দেখা গেল দক্ষিণপন্থীরা বামপন্থীদের সঙ্গে সহযোগিতা

৭৩