পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৮৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 সত্যিই আরও কিছু ছিল।

 দক্ষিণপন্থী প্রভাবান্বিত কংগ্রেস কর্তৃপক্ষ তাঁকে যে চোখেই দেখুক না কেন বাঙ্গালী কোনদিন তাঁকে দেশের শীর্ষস্থান থেকে একচুলও নড়াতে পারে নি। তাই কংগ্রেস অবৈধ বলে ঘোষণা করলেও বাঙ্গলা দেশ সুভাষচন্দ্রকে বঙ্গীয় প্রাদেশিক রাষ্ট্রীয় সমিতির সভাপতিরূপে বরণ করে নিলে। ফলে বঙ্গীয় প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটি অবৈধ বলে ঘোষিত হল কংগ্রেস হাই কমাণ্ডের তরফ থেকে এবং শরৎচন্দ্র বসু তাঁর সঙ্গীগণ সহ কংগ্রেস পার্লামেণ্টারী পাটি থেকে বহিষ্কৃত হলেন।

 ইতিমধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়ে যাওয়ায় কংগ্রেস ও তার বৈদেশিক নীতির কিছুটা সংস্কার মানসে ওয়ার্কিং কমিটির এক অধিবেশনে সুভাষচন্দ্রকে বিশেষ অতিথি হিসাবে নিমন্ত্রণ করে নিয়ে যাওয়া হল। কিন্তু সুভাষচন্দ্র সেখানে গিয়ে ব্যর্থ মনোরথে সভা ত্যাগ করে চলে এলেন। তাঁর আশা ছিল এই সুযোগে কংগ্রেস বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদকে চরম আঘাত হেনে একবারে চিরতরে বিধ্বস্ত করে দেবে। কিন্তু তাঁর মত এই অধিবেশনে গ্রাহ্য হল না। সদ্য চীন প্রত্যাগত জওহরলাল নেহরুই জয়ী হলেন।

 সুভষচন্দ্র সভা ত্যাগ করে এসেছিলেন বলে অনেকে তাঁর বিরুদ্ধ সমালোচনা করে। কিন্তু যারা বিরুদ্ধ সমালোচনা করে তারা জানে না নিজের মতবাদের ওপর সুভাষচন্দ্রের নিষ্ঠা কত গভীর। শুধু বাহ্যিক ও রাজনৈতিক জীবনে নয় ব্যক্তিগত জীবনেব তুচ্ছ ঘটনার মধ্যেও এই বৈশিষ্ট্যটুকু সহজেই চোখে পড়ে। নিজের মনের জোর এবং মতের জোর অক্ষুণ্ণ রাখবার জন্য তিনি জীবনে ধূমপান করেন নি।

 ১৯৪০ সাল কর্মবীর সুভাষচন্দ্রের জীবনের একটি কর্মবহুল অধ্যায়। এই বছর জানুয়ারী মাসে তিনি কোলকাতায় কংগ্রেসের উদ্দেশ্যে একখানি বাড়ী নির্মাণ করবার পরিকল্পনা করেন। বিরাট এক জনতার সম্মুখে চিত্তরঞ্জন

৭৫