পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৮৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

বৈজ্ঞানিক জগতে যেখানে বিজ্ঞানবলে এক দেশের নিভৃত ষড়যন্ত্রও অন্যদেশে অতি সহজেই প্রকাশ পেয়ে যায় সেই জগতের ওপরেই এক দেশের মানুষ তার শত্রুপক্ষের দেশে গিয়ে হাজির হল, কেউ বাধা দিতে পারলো না, এ সম্ভব হয় কোন মন্ত্র বলে?

 এ কথা সত্যি ব্যাপারটা যাদু নয়, মন্ত্র বলও নয়। সত্যিকারের যে সাধক তার মনের মধ্যে সাধনার বলে এমন একটা শক্তি সুপ্ত হয়ে থাকে যে যখন তাকে জাগ্রত করা যায় তখন সে অসাধ্য সাধন করতে পারে। সুভাষবাবু নিজে মান্দালয় জেল থেকে লিখেছিলেন, যেদিন প্রস্তুত হব সেদিন এক মুহুর্তের জন্যও আমাকে কেহ আটকে রাখতে পারবে না। সুভাষবাবুর এই অন্তর্ধানের মূলে আছে এই প্রস্তুত হওয়ার সংকেত।

 একেবারে ছাত্রাবস্থা থেকেই আমরা দেখেছি সুভাষচন্দ্রের সংগঠনীশক্তি অসীম। যে কোন অবস্থাতেই হোক আর যে পরিমাণ সঙ্গতি নিয়েই হোক তিনি সব সময়েই কোন প্রতিষ্ঠান, কোন দল, বা কোন পরিকল্পনাকে গড়ে তুলতে পারতেন। তাই তিনি যে শত্রুপক্ষের সঙ্গে একটা যোগাযোগের ব্যবস্থা করে নিজের কার্যসিদ্ধি করতে পারবেন এ বিষয়ে খুব বেশী আশ্চর্য হবার কিছু নেই। তবে চারিদিকে কড়া পাহারা, সেন্সার ও সামরিক বেড়াজাল ডিঙ্গিয়ে তিনি কি ভাবে যে সফলকাম হতে পারলেন সেইটিই সমস্ত জগতের সামনে সমস্যা হয়ে দাঁড়ালো। তবে স্পর্শমণি যা কিছুই স্পর্শ করে তা সোনা হয়ে যায়, এতে কোন ভুল নেই ৷

 তবু একথা অস্বীকার করবার উপায় নেই যে সুভাষবাবু যে ভাবে এবং যে দেশেই গিয়ে থাকুন এদেশের তাঁর একান্ত বিশ্বাসী কয়েকজন সহচরের সাহায্য তাকে নিশ্চয়ই নিতে হয়েছিল, নতুবা এ কাজ একা সম্ভব নয়। অবশ্য, তাঁর অন্তর্ধানের পর সরকার পক্ষ থেকে বহু চেষ্টা হয়েছে এঁদের ধরবার। বহু ফরোয়ার্ড ব্লক কর্মী, সুভাষবাবুর বাড়ীর লোকেরা, যেমন শিশির বসু, অরবিন্দ বসু

৮০