পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৯১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

মোটর যোগে বর্ধমান পর্যন্ত যান সেখান থেকে পাঞ্জাব মেলে একখানা সেকেণ্ড ক্লাস রিজার্ভ কামরা করে পাঞ্জাবে গিয়ে হাজির হন। কি অসম্ভব কাণ্ড! সুভাষবাবু আপনার আমারই মত পাঞ্জাব মেলে চড়ে ‘যুদ্ধ’ করতে চলেছেন! কিন্তু তাঁকে চেনবার জো নেই একেবারে। মুখে তাঁর বিরাট দাড়ি গোঁফ, মাথায় পাগড়ী—দেখলে মনে হবে বিবাট এক পাঠান চলেছে বুঝি! যাই হোক পেশোয়ারে গিয়ে তিনি ছ’দিন ছিলেন খান আব্বাসখানের আশ্রয়ে। পেশোয়ার থেকে একজন দেহরক্ষীর সঙ্গে তিনি কাবুল যাত্রা করলেন। পাঁচ মাইল পর্যন্ত পেশোয়ারী টোঙ্গায় আর তারপর বাকী রাস্তা পায়ে হেঁটে তিনি কাবুল এসে পৌঁছলেন। কাবুলে পৌঁছে কিন্তু তিনি বিপদে পড়েন। হঠাৎ তিনি আমাশয় রোগে পড়েন এবং সেই অসুস্থ অবস্থায় একজন গোয়েন্দার পাল্লায় পড়েন। শেষে দশটা টাকা ও তাঁর সঙ্গের ফাউণ্টেন পেনটা তাকে দিয়ে তবে উদ্ধার পান। যুদ্ধ জয় করতে হলে ছল বল কৌশল এ তিনেরই আশ্রয় নিতে হয়, শুধু বলে সব ক্ষেত্রে চলে না।

 কাবুল থেকে তিনি রাশিয়ায় যাবার চেষ্টা করেন। কিন্তু রাশিয়া সরকার জানান যে, রুশ-জার্মাণ চুক্তি ভাঙ্গতে চলেছে এবং শীঘ্রই বৃটিশের সঙ্গে তাদের চুক্তি হবে সুতরাং বৃটিশের পক্ষে ক্ষতিকর কোন কাজ তারা করতে পারে না। এর পর তিনি একজন জার্মানের সংস্পর্শে আসেন, এবং তিনি ভারতের বাইবে যেতে চাইছেন জেনে সেই জার্মান ভদ্রলোক বার্লিনের সঙ্গে যোগাযোগের ব্যবস্থা করে দেন। এবং সুভাষবাবু রাশিয়ার সীমানার ওপর দিয়ে বিমান পথে বার্লিনে গিয়ে পৌঁছান।

 এই হল মোটামুটি ইতিহাস। আমরা পূর্ণ বিবরণ না পেলেও যে সব ভাগ্যবান দেশ প্রেমিকের দল যারা সুভাষবাবুকে এই ব্যাপারে সর্বদিক দিয়ে সাহায্য করেছেন সেই অখ্যাতনামা বন্ধুদের আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই।

 ঐ একই ব্যক্তির কাছ থেকে খবর পাওয়া গেছে যে সুভাষবাবু ১৯৩৯ সালে

৮৩