পাতা:নেতাজী ও আজাদ হিন্দ ফৌজ - জ্যোতিপ্রসাদ বসু.pdf/৯৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

 টোকিও থেকে সিঙ্গাপুর!

 পুঞ্জ পুঞ্জ মেঘের স্তূপে ঝলসে উঠলো বিদ্যুৎ।


 টোকিও রেডিও থেকে প্রথম যে বেতার বক্তৃতা তিনি দিয়েছিলেন, তাতে বলেছিলেন, আমার এ কথায় বিশ্বাস করুন যে আমি ভারতেরই উদ্দেশ্যে একজন ভারতীয়। পার্থীদের মধ্যে কাক হল সবচেয়ে ধূর্ত ও নিষ্ঠুর, পশুদের মধ্যে শৃগাল আর মানুষের মধ্যে সাম্রাজ্যবাদী বৃটিশ জাতি। এই বৃটিশ যদি আমাকে প্রলোভিত করতে না পেরে থাকে তাহলে জগতে আর কোনও শক্তি নেই যে তা পারে। তাহলেও আপনাদের মনের সন্দেহের কথা আমি অনুভব করি। আমি পূর্ব-এশিয়ার ভারতীয়দের ডাক দিয়ে বলছি আপনারা আমাদের মাতা হিন্দুস্থানের স্বাধীনতা উদ্ধারের মহৎ কার্যের উদ্দেশ্যে একই পতাকার তলে সমবেত হন। ভারতবর্ষ এক দেশ। ভারতবাসী এক জাতি। আমাদের একমাত্র পতাকা ত্রিবর্ণ পতাকা। আমাদের একমাত্র শত্রু বৃটেন। দিল্লীর দিকে এগিয়ে চলুন এবং লাল কেল্লার ওপর ত্রিবর্ণ পতাকা উত্তোলন করুন। আমি আশা করি আপনারা হিন্দুস্তানের শৌর্য ও বীর্যের ঐতিহ্য অক্ষুণ্ণ রাখবেন।


 ১৯৪৩ সালের জুলাই মাসের চার তারিখে সিঙ্গাপুরের ক্যাথে বিল্ডিং অপূর্বভাবে সজ্জিত হল। প্রায় পাঁচ হাজার প্রতিনিধি এসে মিলিত হলেন এই প্রাসাদে! একজন ভারতীয় প্রায় এক লক্ষ টাকা দিয়ে একখানা আসন সংগ্রহ করলেন।

 লক্ষ লক্ষ ভারতীয় ও অভারতীয় নরনারী জড় হলেন অট্টালিকার চারদিকে। তাঁদের উদ্দেশ্য একটিবার মাত্র দর্শন করবেন এই রহস্যময় লোকটিকে! কে এই বিপ্লবী বীর? কোথাকার ভারতবর্ষের কোন এক গৃহ হতে বার হয়ে পশ্চিম প্রদক্ষিণ করে কোন সে সাহসী যুবক এসে দাঁড়িয়েছে স্বাধীন ভারতের প্রথম উদয় তীর্থে?

৯০