পাতা:নেতাজী সুভাষ চন্দ্র - হেমেন্দ্রবিজয় সেন.pdf/১১৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১০০
নেতাজী সুভাষচন্দ্র

সেখান হইতে রওয়ানা হইয়া ২৮শে মার্চ্চ তিনি জার্ম্মাণীর রাজধানী বার্লিনে উপনীত হইলেন।[১]

 সুভাষচন্দ্র কাবুল পরিত্যাগ করিয়া চলিয়া যাইবার মাত্র কয়েক দিন পরেই পুলিশ-বিভাগ জানিতে পারে যে, দুইজন ভারতীয় (সুভাষচন্দ্র ও ভগৎরাম) কাবুলে কোন হিন্দুর গৃহে আশ্রয় লইয়াছেন। সুতরাং তখন জোর পুলিশের অনুসন্ধান আরম্ভ হইল, উত্তমচাঁদের নিকট অনুসন্ধান করা হইল।

 উত্তমচাঁদকে শুধু প্রশ্ন করিয়াই পুলিশ-বিভাগ ক্ষান্ত রহে নাই! সুভাষচন্দ্রকে আশ্রয়দান ও তাঁহাকে বিদেশ গমনে সাহায্য করিবার অপরাধে তিনি দীর্ঘকাল কারাদণ্ড ভোগ করিয়াছেন এবং পুলিশ তাঁহার লক্ষাধিক টাকার সম্পত্তি ক্রোক ও নিলাম-বিক্রয় করিয়া তাঁহাকে সর্ব্বস্বান্ত করিয়া দিয়াছে। বস্তুতঃ এই মহাপুরুষের সাহায্য না পাইলে, সুভাষচন্দ্রের যাবতীয় উদ্যম সম্ভবতঃ অঙ্কুরেই বিনষ্ট হইয়া যাইত।

 সুভাষচন্দ্র বার্লিণে পৌঁছিয়া প্রায় মাস তিনেক পরে হাজি সাহেবের জার্ম্মাণ পত্নীর নিকট যে পত্র লিখিয়াছিলেন, তাহাতে এই মহাপুরুষের নিকট তাঁহার প্রাণের গভীর কৃতজ্ঞতা জানাইয়া লিখিয়াছিলেন—

 উত্তমচাঁদ নমস্তে! আপনি যাহা করিয়াছেন, সেজন্য আমি কৃতজ্ঞ। সারাজীবনেও আমি তাহা কখনও ভুলিতে পারিব না।

জিয়াউদ্দিন
  1. পাঠকদের স্মরণ থাকিতে পারে, ইহার মাত্র মাস-কয়েক পরেই—১৯৪১ সালের ২২শে জুন তারিখে রাশিয়া ও জার্ম্মাণীর মধ্যে যুদ্ধ বাধিয়া উঠিয়াছিল।