পাতা:নেতাজী সুভাষ চন্দ্র - হেমেন্দ্রবিজয় সেন.pdf/৩৩

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেতাজী সুভাষচন্দ্র
২৩

জেলে স্থানান্তরিত হন। বহরমপুর হইতে তাঁহাকে ব্রহ্মদেশের মান্দালয়ে নির্ব্বাসিত করা হইল।

 মান্দালয়ে নির্ব্বাসিত জীবনে নির্জ্জন কারাবাসের ফলে এবং অতিরিক্ত গ্রীষ্মাধিক্যহেতু সুভাষচন্দ্রের স্বাস্থ্য ভগ্ন হইয়া যায়, ১৯২৭ খৃষ্টাব্দের এপ্রিল মাসে তিনি শয্যাশায়ী হইয়া পড়েন। ইহাতে বঙ্গীয় গভর্ণমেণ্ট তাঁহাকে মান্দালয় হইতে কলিকাতায় না আসিয়া সোজাসুজি ইয়োরোপ যাওয়ার অনুমতি দিবার প্রস্তাব করেন; কিন্তু সুভাষচন্দ্র গভর্ণমেণ্টের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করিয়াছিলেন।

 ইতঃপূর্ব্বে গভর্ণমেণ্ট মান্দালয়ে অবস্থিত বন্দীদিগকে পূজা ও ধর্ম্মকার্য্যের জন্য অর্থ প্রদানে অস্বীকৃত হন। এই অস্বীকৃতির প্রতিবাদ-স্বরূপ ১৯২৬ খৃষ্টাব্দের ২০শে ফেব্রুয়ারী তারিখে সুভাষচন্দ্রও অন্যান্য বন্দিগণের সহিত অনশন-ব্রত অবলম্বন করেন। কলিকাতা কর্পোরেশন ২৪শে ফেব্রুয়ারী তারিখের সভায় গভর্ণমেণ্টের এই কার্য্যের তীব্র প্রতিবাদ করেন।

 ২৬শে ফেব্রুয়ারী সমগ্র কলিকাতা মহানগরীর নাগরিকবৃন্দ গভর্ণমেণ্টের এই কার্য্যের প্রতিবাদে পূর্ণ হরতাল প্রতিপালন করে; পুনরায় ২৮শে ফেব্রুয়ারী তারিখে বাংলার অম্লান-কুসুমতুল্য সুকুমার সন্তানগণের দুঃখে আন্তরিক সহানুভূতি জ্ঞাপন করিয়া কলিকাতাবাসী দ্বিতীয় বার হরতালের অনুষ্ঠান করে। অবশেষে সুভাষচন্দ্র ও তাঁহার সঙ্গী বন্দিগণ ৪ঠা মার্চ্চ তারিখে অনশন-ব্রত পরিহার করেন।