পাতা:নেতাজী সুভাষ চন্দ্র - হেমেন্দ্রবিজয় সেন.pdf/৩৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪
নেতাজী সুভাষচন্দ্র

 এই অনশন-ব্রত উদ্‌যাপনে সুভাষচন্দ্র ও তাঁহার সঙ্গী বন্দিগণের মানসিক শক্তি কিরূপ বিপুল, তাহা সহজেই অনুমিত হয়। সাধারণ মানুষ কয়েক ঘণ্টা বা দুই-এক দিনের উপবাসে কিরূপ কাতর হইয়া পড়ে, তাহা নিত্য প্রত্যক্ষের বিষয়; কিন্তু যাহারা প্রায় পনের দিন ক্ষুৎ-পিপাসার কঠোর জ্বালা নির্ব্বিকার-চিত্তে সহ্য করিতে পারে,— তাহারা বাস্তবিকই প্রণম্য ও নমস্য। সাধারণের গণ্ডী অপেক্ষা এই সমস্ত মহামানব যে অনেক ঊর্দ্ধস্তরে অবস্থিত, সে সম্বন্ধে কোন সন্দেহ নাই।

 ১৯২৫ খৃষ্টাব্দের ১৬ই জুন মঙ্গলবার, চির-তুষারমণ্ডিত হিমালয়ের দুর্জ্জয়-লিঙ্গ শৈলশিখরে বাংলার গৌরবরবি মহামতি দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন চিরকালের জন্য অস্তাচলে গমন করেন। সুভাষচন্দ্র তখন সুদূর ব্রহ্মদেশে মান্দালয়ে কারাপ্রাচীরের অন্তরালে নির্ব্বাসিত জীবন যাপন করিতেছিলেন। সুতরাং দেশবন্ধুকে হারাইয়া তাঁহার অন্তরে শোক-দুঃখের যে বিরাট্ ঝঞ্ঝা বহিয়া যাইতেছিল, তখন তাহার কোন বাহ্য বিকাশ পরিলক্ষিত হয় নাই।

 ১৯২৬ খৃষ্টাব্দের ৩রা মার্চ্চ মান্দালয় হইতে তিনি যে পত্র লিখিয়াছিলেন, তাহাতে তাঁহার অন্তরের ব্যথা পূর্ণভাবে প্রকাশ পাইয়াছে। এতদ্ব্যতীত এই পত্রে তিনি দেশবন্ধুর সঙ্ঘ-গঠন শক্তি, অনুগত ব্যক্তির প্রতি ভালবাসা, কবিত্ব, ধর্ম্ম এবং পরোপকার-বৃত্তির বিষয়ে অনেক কথা বলিয়াছেন। সুভাষচন্দ্র এই একখানি পত্রে দেশবন্ধুর সর্ব্বতোমুখী প্রতিভার