পাতা:নেতাজী সুভাষ চন্দ্র - হেমেন্দ্রবিজয় সেন.pdf/৫২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২
নেতাজী সুভাষচন্দ্র

নির্ব্বাচিত হইলেন; কিন্তু সম্মেলনের অধিবেশন হইবার পূর্ব্বেই ভগৎ সিং ও শুকদেব সিংএর ফাঁসি হইয়া গেল। ইহাতে তরুণের পুঞ্জীভূত ক্ষোভ যেন চরমে উঠিল। তাঁহারা মনে করিলেন, যাঁহার গভর্ণমেণ্ট এত বড় একটা সাঙ্ঘাতিক কাজের পৃষ্ঠপোষক ও অনুমোদক, তাঁহার সহিত চুক্তিবদ্ধ হইয়া অসহযোগ-আন্দোলন বন্ধ করা মহাত্মার খুবই অন্যায় হইয়াছে। সুতরাং অতঃপর তিনি যখন করাচিতে উপস্থিত হইলেন, তখন ক্ষুব্ধ জনতা তাঁহাকে কৃষ্ণ পতাকা প্রদর্শন করিয়া অভ্যর্থনা করিল।

 নও-জোয়ান কংগ্রেসের অধিবেশন শেষ হইলে, সেই মণ্ডপেই নিখিল-ভারত লাঞ্ছিত রাজনীতিক সম্মেলনের অধিবেশন হয়। সুভাষচন্দ্র তাহাতেও সভাপতিত্ব করেন। তখন সভাপতির অভিভাষণে তিনি বলিয়াছিলেন, “আইন-অমান্য-আন্দোলন বন্ধ করিবার আদেশ দিয়া মহাত্মাজী দেশের স্বাধীনতা লাভের পক্ষে গুরুতর ক্ষতি করিয়াছেন। তাঁহার সঙ্গে বড়লাটের চুক্তি দেশের কাছে বিশ্বাসঘাতকতা মাত্র!”

 ১৯৩১ খৃষ্টাব্দের ৩১শে মার্চ্চ তারিখে করাচি-মিউনিসিপ্যালিটি কলিকাতা-কর্পোরেশনের লর্ড-মেয়র সুভাষচন্দ্রকে এক স্বাগত-অভিনন্দন প্রদান করিয়া সম্বর্দ্ধিত করেন; এই অভিনন্দনের উত্তরে সুভাষচন্দ্র প্রথমেই দেখাইয়া দেন যে, এই পরাধীন দেশে লর্ড বা প্রভু কেহ নাই—সকলেই দাস।[১]


  1. “Subhash Chandra Bose...pointed out that in their enslaved country, there were yet no lords but all slaves.”—lbid, P. 444.