হউক্, সুভাষচন্দ্র দেশবাসীর আহ্বানে সাড়া দিতে সঙ্কল্প করিলেন।
তাহা ছাড়া, সম্ভবতঃ আরও একটি কারণ ছিল। দেশকে যাহারা ভালবাসে, তাহারা দেশকে ছাড়িয়া দীর্ঘকাল বিদেশে নির্ব্বাসিত জীবন যাপন করিতে পারে না। ফরাসী সম্রাট্ মহাবীর নেপোলিয়ন বোনাপার্ট প্রকৃতই ফ্রান্সকে ভালবাসিতেন; সেই জন্য তিনিও এল বা দ্বীপে নির্ব্বাসিত জীবন দীর্ঘকীল যাপন কনিতে পারেন নাই—গোপনে এল বা ত্যাগ করিয়া ফ্রান্সে ফিরিয়া আসিয়াছিলেন।
সুভাষচন্দ্রও নেপোলিয়নের মত ইয়োরোপ ত্যাগ করিয়া ভারতের অভিমুখে যাত্রা করিলেন। গভর্ণমেণ্ট-বিজ্ঞাপিত বন্দী-জীবনের বিভীষিকাও তাঁহাকে সঙ্কল্প হইতে চ্যুত করিতে পারিল না, বিপদের ঝঞ্ঝাবৃষ্টি মাথায় করিয়া তিনি আবার সাগর-পাড়ি দিলেন। চিরদিন বিদেশে নির্ব্বাসিত জীবন যাপন করা অপেক্ষা স্বদেশে কারা-প্রাচীরের অন্তরালে অবস্থিতিও তিনি শ্রেয়ং মনে করিলেন।
১৯৩৬ খৃষ্টাব্দের ৮ই এপ্রিল তিনি বোম্বাই বন্দরে অবতরণ করেন। সঙ্গে-সঙ্গে তাঁহাকে ১৯১৮ সালের ৩নং রেগুলেশন অনুসাবে গ্রেপ্তার করিয়া পুণা যারবেদা-জেলে রাখা হয়; বিভিন্ন জেলে অবস্থিতির পর তাঁহাকে তাঁহার দাদা শরৎচন্দ্র বসুর কার্শিয়াংস্থিত বাড়ীতে অন্তরীণ করা হয়।
সুভাষচন্দ্রের গ্রেপ্তারে সমস্ত দেশে একটা আন্দোলনের সৃষ্টি হয়। ১০ই মে দেশের সর্ব্বত্র “নিখিল-ভারত সুভাষ-দিবস”