পাতা:নেতাজী সুভাষ চন্দ্র - হেমেন্দ্রবিজয় সেন.pdf/৮৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭২
নেতাজী সুভাষচন্দ্র

যে, সুভাষচন্দ্র স্বপ্ন দেখিতেন বটে, কিন্তু সে স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত করিবার উদগ্র প্রচেষ্টাও তাঁহার ছিল।

 সামরিক চিত্র যে তাঁহার কত আকাঙিক্ষত, সে বিষয়ে তিনি শ্রদ্ধেয় শ্রীযুক্ত বিজয়বাবুর নিকট কথা-প্রসঙ্গে একদিন বলিয়াছিলেন। তিনি বলিয়াছিলেন,—

 “দাদা, সামরিক বেশভূষা ও আদব-কায়দার ওপর আমাদের মত দুর্ব্বল, নিরস্ত্র ও পরাধীন দেশের লোকদেরও যে কতখানি সম্ভ্রম ও সমীহ, তা বােধহয় আপনারা কল্পনা করতেও পারেন না। অন্য়ে পরে কা কথা! মহাত্মা গান্ধী যখন সামনে দিয়ে যান, তখন লােকের মনে শুধু ভক্তিই জেগে ওঠে, পায়ের ধূলো নেবার জন্যে হুড়ােহুড়ি পড়ে যায়— এই মাত্র! কিন্তু আমাদের স্বেচ্ছাসেবক-বাহিনী যখন নিয়মবদ্ধ সারিবদ্ধ হয়ে কদমে-কদমে চলে যায়, তখন জনতা দু’ধারে স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়ে, শ্রদ্ধান্বিত অন্তরে কি ভাবে, জানেন? ভাবে, আমিও কেন স্বেচ্ছাসেবক হই নি? হােলে আমিও ত অমনি বীরদর্পে কদমে-কদমে হাঁটতে পারতুম! দাদা, এর মুল্য আমার কাছে অনেক— অনেক; অমুল্য, মহামুল্য!”

 কথাটা খুবই সত্য, আমরাও তাহা স্বীকার করি। স্বাধীন ভারতের সামরিক চিত্রই যদি তাঁহার সম্মুখে স্বর্ণ-কিরীটী নবারুণের উজ্জ্বল বিভায় ফুটিয়া না উঠিত, তাহা হইলে কি এমন উন্মাদের মত সর্ব্বস্ব পরিত্যাগ করিয়া, চূড়ান্ত বিপদের ঝুকি কাঁধে লইয়া, রাষ্ট্রশক্তিকে ফাঁকি দিবার জন্য তিনি মারাঠা-বীর চতুর শিবাজীর অভিনয়ে সাহসী হইতেন?

 সুভাষচন্দ্রের অন্তর্দ্ধান-কাহিনী, স্বাধীনতার জাতীয় ইতিহাসে চিরদিনই রক্ত-অক্ষরে লিখিত থাকিবে, আর