পাতা:নেপালে বঙ্গনারী - হেমলতা দেবী.pdf/১০৮

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৮
নেপালে বঙ্গনারী।

চতুর্দ্দিকে প্রদক্ষিণ করিয়া যেই রাজবাড়ীর সম্মুখে উপস্থিত হইল, অমনি রাজার গদি তাহার সম্মুখে বিস্তৃত হইতেই স্বয়ং পৃথ্বীনারায়ণ সেই গদিতে উপবিষ্ট হইয়া বলিলেন, “আমিই এখন অধীশ্বর, আমিই রাজা, রাজা বলিয়া আমায় বরণ কর।” তখন এমন অবস্থা হইল, সমুদয় আনন্দ কোলাহল বিস্ময়ে পরিণত হইল। কাহারও আর বাক্যস্ফুর্ত্তি হইল না। বাধা দেয় এমন সাধ্য আর কাহারও রহিল না। বিনা রক্তপাতে কাটমণ্ডু পৃথ্বীনারায়ণের হস্তগত হইল।

 পৃথ্বীনারায়ণ পাটন অধিকার করিলে পর তথাকার রোমন কাথলিকগণ পৃথ্বীনারায়ণের এক পুত্রের সহায়তায় নির্ব্বিবাদে পাটন পরিত্যাগ করিয়া সদলে যাইবার অনুমতি প্রাপ্ত হন। তাঁহারা বিটওয়ার নিকট পুরী নামক স্থানে অদ্যাবধি বাস করিতেছেন। সেখানে নেওয়ার খৃষ্টানগণ অদ্যাপি বংশ পরম্পরায় বাস করিতেছে। পৃথ্বীনারায়ণ দৃঢ় চেষ্টায় এবং চক্রান্তকারী ব্রাহ্মণদিগের সহায়তায় এই সকল রাজ্য অধিকার করিলেন। নেওয়ারগণ, বিশেষতঃ কীর্ত্তিপুরের অধিবাসীগণ যে জাতীয় স্বাধীনতা লোপের সময় বীরের ন্যায় আত্মরক্ষ্মা করিতে চেষ্টা করিয়াছিল, তাহা কেহই অস্বীকার করিতে পারেনা। এবং পৃথিনারায়ণ চক্রান্তকারী ও বিশ্বাসঘাতক ব্রাহ্মণদিগের সহায়তা না পাইলে কখনই সহজে কৃতকার্য্য হইতে পারিতেন না।