পাতা:নেপালে বঙ্গনারী - হেমলতা দেবী.pdf/১৫১

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেপালের আদর্শ সতী স্বগীয়া বড় মহারাণী।
১১৩

স্ত্রীলোেক সপত্নী ভয়ে কাতর হইয়া মৃত্যুশয্যায় পতিকে আবার বিবাহ করিতে নিষেধ করে! কয়জন নারী, আছেন যিনি প্রাণ খুলিয়া স্বামীকে এইরূপ অনুরোধ করিতে পারেন? মৃত্যুর পূর্ব্বে একদিন তিনি কন্যাকে বলিয়াছিলেন, “আমি তোমার পিতাকে কেবল কষ্টই দিলাম। যদি তোমার পিতা আবার বিবাহ করেন, তাঁহাকে সম্মান করিও, আদর করিও। তিনি তোমার গুণবতী মাতা হইবেন, তিনি তোমাদের শূন্য গৃহ পূর্ণ করিবেন, তোমার শোকার্ত্ত পিতার অন্তরে শান্তি দিবেন।”—আমরা কখন শুনি নাই কোন মাতা এরূপভাবে কন্যাকে কখনো উপদেশ দিয়াছেন।

 মহারাণী আদর্শ মাতা ছিলেন, সন্তানদিগের সুশিক্ষার প্রতি নিয়ত দৃষ্টি রাখিতেন। একদিন শিশু পুত্রটী কি অন্যায় করিয়াছিল, তিনি শুনিয়া চক্ষের জলে ভাসিয়া বলিয়াছিলেন, “আমি কি পাপিনী, আমার গর্ভের সন্তান কেন এরূপ করিল?” শিশুর অপরাধ সকলেই তুচ্ছ করে কিন্তু তাঁহার নিকট শিশুর অপরাধ গুরুতর বোধ হইত। সন্তানেরা তাঁহাকে যেমন শ্রদ্ধা ভক্তি করিত, তেমনি ভয় করিত, এমনি তাঁহার সুদৃঢ় শাসন ছিল। এই চরিত্রবতী রমণীর প্রাণে অতি আশ্চর্য্য সৎসাহস ও তেজস্বিতা ছিল। কোন প্রকার অন্যায়ের প্রশ্রয় তিনি দিতেন না।

 মহারাণী প্রচুর, দান ধ্যান করিয়া গিয়াছেন, তাহার পরিমাণ নির্ণয় করা অসাধ্য। তুলা-দান, সহস্র সহস্র গাভী দান, সুসজ্জিত গৃহ ও উদ্যান ব্রাহ্মণকে দান করিয়া গিয়াছেন। পতির নামে