আহারের ক্লেশ পাইতে হয়। আমাদের সঙ্গে ভৃত্য ও পাচক ছিল। বটে, কিন্তু পূর্ব্বের অভিজ্ঞতা না থাকায় সঙ্গে যথেষ্ট আহার্য আনা হয় নাই। সুতরাং সে বিষয়ে কিঞ্চিৎ অসুবিধা ভোগ করিতে হইয়াছিল। ভীমফেদী উপত্যকার ন্যায়, চতুর্দ্দিকে পর্ব্বতমালা বেষ্টিত। পরদিন প্রত্যুষে আহারাদির কোন চেষ্টাই না করিয়া শিশুসন্তানদিগের জন্য মহিষের দুগ্ধের সংস্থান করিয়া আমরা, যাত্রা করিলাম। পথের কষ্টে নাকাল হইয়া আজ আমাদের প্রতিজ্ঞা কাটমণ্ডুতে পৌঁছিতেই হইবে। ভীমফেদী হইতে বাহির হইয়া অতি অল্পক্ষণের মধ্যেই পর্ব্বতে উঠিতে আরম্ভ করিলাম। ওঃ সে কি ভয়ানক পথ! যেন সোজা ভাবে উঁচু হইয়া উঠিতেছে। পথে আছে গাছ পালা না আছে আশ্রয়। পথও কি তেমনি? পা দিবা মাত্র নোড়া নুড়ি গড়াইয়া পড়িতেছে। কেবল ক্ষণে ক্ষণে ভয় হইতেছে বাহকগণ এইবার বুঝি আমাদের স্কন্ধে লইয়া গড়াইয়া তলায় পড়িয়া যায়। বাহকগণও গল্দ্ঘর্ম্ম, অতি কষ্টে সাবধানে উঠিতেছে আর মুখে “নারাণ” “নারাণ” বলিতেছে। নিশ্চিত, নেপালী বাহক ভিন্ন সে পথে আর কেহ ভার বহন করিয়া যাইতে পারে না। পথ এমন সোজা যে আমাদের কার্পেট হইতে পড়িয়া যাইবার উপক্রম হইতেছে। ক্রোড়ের শিশুকে এক হস্তে চাপিয়া ধরিয়া আর এক হস্তে কার্পেট চাপিয়া ধরিয়াছি, আর বারংবার সকলকে সাবধান করিয়া দিতে হইতেছে। এই ভীষণ খাড়াই যেন শেষ হয় না। প্রায় ২৩০০ ফুট এই ভাবে উঠিলাম, ভয়ে যেন হৃৎপিণ্ডের শোণিত খর বেগে চলিতে চলিতে সহসা বন্ধ
পাতা:নেপালে বঙ্গনারী - হেমলতা দেবী.pdf/২২
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬
নেপালে বঙ্গনারী।