পাতা:নেপালে বঙ্গনারী - হেমলতা দেবী.pdf/৫৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩২
নেপালে বঙ্গনারী।

ম্লান হইয়া আসিয়াছে এবং সমুদায় বৌদ্ধস্মৃতি বিসর্জ্জন দিয়া উক্ত দেবালয় মহাদেবের মন্দির হইয়াছে। বস্তুতঃ পশুপতিনাথের বিগ্রহে মহাদেবের কোন বিশেষত্ব দেখা যায় না। তবে মন্দিরের প্রাঙ্গনে, ত্রিশূল, বৃষ, শিবলিঙ্গ সকলই বর্ত্তমান। মন্দিরটী অতি সুদৃশ্য এবং উচ্চ। নেপালের সকল নৃপতি, সকল প্রসিদ্ধ ব্যক্তি, পশুপতিনাথের মন্দিরের কিছু না কিছু শ্রীবৃদ্ধি করিয়া গিয়াছেন। নেপালরাজ সদাশিব দেব পশুপতিনাথের মন্দিরের ছাদ স্বর্ণ মণ্ডিত করিয়া গিয়াছেন। সুপ্রসিদ্ধ রাজমন্ত্রী, ভীমসেন থাপা কর্ত্তৃক পশুপতিনাথের মন্দিরের প্রাঙ্গণে সুবর্ণ মণ্ডিত একটী প্রকাণ্ড বৃষ স্থাপিত দেখিতে পাওয়া যায়। এতদ্ভিন্ন কত যে স্বর্ণময় বৃষ, কত যে শিবলিঙ্গ আছে তাহা গণনা করা দুঃসাধ্য। পশুপতি নাথের মন্দিরে স্বর্ণ রৌপ্যের অতিশয় প্রাচুর্য দেখা যায়। ভারতের প্রায় অন্য সকা তীর্থ মুসলমানদিগের হস্তস্পর্শে হতশ্রী হইয়াছে। এই সকল তীর্থের ধন সম্পত্তি বারম্বার লুষ্ঠিত হইয়াছে—কেবল পশুপতিনাথ ইহার ব্যতিক্রম স্থল। নেপালে বুদ্ধ গিয়াছেন, অশোক গিয়াছেন, বিক্রমাদিত্য গিয়াছেন, শিলাদিত্য গিয়াছেন, শঙ্কর গিয়াছেন, কেবল যান নাই মুসলমান দিগ্বিজয়ীগণ। বৌদ্ধ এবং হিন্দুগণ নেপালে অনেক কীর্ত্তিস্থাপন করিয়াছেন, অনেক দেবালয়, অনেক মন্দির প্রতিষ্ঠা করিয়াছেন। কিন্তু মুসলমান হস্তে কোন দিন তাহা স্পৃষ্ট হয় নাই। স্পর্শ করা দূরে থাকুক, দৃষ্টিপাতও করেন নাই। পশুপতিনাথের প্রভূত ঐশ্বর্য্য সহস্র সহস্র বৎসর ধরিয়া পূঞ্জীকৃতই হইতেছে, লুণ্ঠন করিতে কেহ আসে নাই। তাই