বা শাস্ত্র, সঙ্ঘ, অর্থাৎ সম্প্রদায় বা সাধকদল। এই ত্রিরত্নের সাঙ্কেতিক চিহ্নরূপে নেপালে এবং বৌদ্ধজগতে সর্ব্বত্রই একটি মধ্যবিন্দু সমন্বিত ত্রিকোণ ব্যবহৃত হয়। এই ত্রিকোণের অনেক প্রকার গুহ্যার্থ আছে। সাঙ্কেতিক “ওম্” শব্দে এই ত্রিরত্ন বৌদ্ধজগতে ব্যবহৃত হয়। বৌদ্ধদিগের নিকট “ওম্” এই বাক্যের অর্থ বুদ্ধ, ধর্ম্ম ও সঙ্ঘ। সমুদায় বৌদ্ধজগতে “ওম্ মণিপদ্মে হুম্” বাক্যটি পদ্মপাণির পূজার মন্ত্ররূপে ব্যবহৃত হয়। ইহার প্রকৃত অর্থ লইয়া অনেক মতভেদ দৃষ্ট হয়। কিন্তু নেপালের পূর্ব্বতন রেসিডেণ্ট সুবিখ্যাত হড্সন্ সাহেব ইহার এইরূপ অর্থ করিয়াছেন,—“সেই ত্রিরত্নের অন্তরে পদ্ম এবং মণি নিহিত আছে।” পদ্মের মধ্য স্থানে একটি মণি পদ্মপাণির চিহ্ন। পদ্মপাণির বৌদ্ধসঙ্ঘেরই মুর্ত্তি। এই মন্ত্র মহাযান, সম্প্রদায়েরই বিশেষত্ব। সিংহল প্রভৃতি দেশের বৌদ্ধগণ এ মন্ত্র ব্যবহার করে না। নেপালে এই মন্ত্র সর্ব্বদাই ব্যবহৃত হয়। আস্তিক বৌদ্ধগণ বিশ্বাস করে এক জন্মে না হউক জন্ম জন্মান্তরের পর বিশুদ্ধাত্মা ও নিষ্কাম হইয়া মানবাত্মা পরমাত্মা বা আদিবুদ্ধে বিলীন হইবে। এই জন্মান্তর বিশ্বাস বৌদ্ধধর্ম্মের একটি মূলভাব। এই বিশ্বাসই “অহিংসা পরমোধর্ম্ম” এই বাক্যের প্রণোদক। এই হেতু জীবহিংসা বৌদ্ধশাস্ত্রে একান্ত নিষিদ্ধ। কিন্তু ইহা অপেক্ষা বিস্ময়কর ব্যাপার কি হইতে পারে যে, নেপালের বৌদ্ধগণ অতি নৃশংস উপায়ে সর্ব্বদা জীবহিংসা করিয়া থাকে। বৌদ্ধধর্ম্মের মূলভাব কিরূপে এরূপ ভাবে পদদলিত হয়, ইহাও
পাতা:নেপালে বঙ্গনারী - হেমলতা দেবী.pdf/৬৫
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
নেপালে বৌদ্ধধর্ম্ম।
৪১