পাতা:নৈবেদ্য - জলধর সেন.pdf/২২

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নৈবেদ্য লাগিল; ইন্দু এদিকে একাদশ ছাড়িয়া দ্বাদশবর্ষে পা দিল,-আগামী বৈশাখে ইন্দুর বিবাহ না দিলেই নয়। অনেক চেষ্টার পর মৈনপুরীর সেরেস্তাদার শ্ৰীযুক্ত রামলাল বন্দ্যোপাধ্যায়ের একমাত্র পুত্র পরেশের সঙ্গে ইন্দুর বিবাহ স্থির হইল। সেরেস্তাদার এক মাত্র পুত্রকে ঘরজামাই রূপে দান করিতে সম্মত হইলেন না ; তবে রাজেন্দ্রবাবুর একটা সান্তুনা ছিল; মৈনপুরী ফরোক্কাবাদ হইতে বেশী দূর নহে, ইচ্ছা করিলেই মেয়েকে দেখিবার উপায় ছিল। সুতরাং বিবাহে। আর কোন আপত্তি রহিল না, বৈশাখের ১৭ই তারিখে ইন্দুর বিবাহ হইয়া গেল । রাজেন্দ্ৰবাবু কাছারীর কাজকৰ্ম্ম বন্ধ রাখিয়া প্ৰিয়তমা দুহিতার সহিত মৈনপুরী যাত্ৰা করিলেন এবং সপ্তাহের মধ্যেই ইন্দুকে লইয়া বাসায় ফিরিলেন। নিরানন্দময় গৃহ সপ্তাহ পরে আবার আনন্দপুর্ণ হইয়া উঠিল, বিষাদ-মেঘ কাটিয়া গেল। বর্ষার সুনিবিড় জলদজাল ধরণীর মুখ আচ্ছন্ন করিয়া রাখিলেও অবশেষে যেমন শরতের পীতরৌদ্ররাগ-রঞ্জিত প্ৰভাতে তাহার শেষ চিহ্ন অপসৃত হয়, বর্ষপরে বঙ্গ গৃহ গিরি দুহিতা উমার সুকোমল পাদস্পর্শে পবিত্র হইয়া উঠে, গৃহে গৃহে আগমনীর সকরুণ-রাগিণীতে বিরহী। মাতৃহৃদয়ের উদার-করুণা উদ্বেলিত হইয়া চারিদিক পরিপূর্ণ করিয়া তুলে, ইন্দুকে শ্বশুরবাড়ী হইতে ফিরিয়া আসিতে দেখিয়া ফরোক্কাবাদের হিন্দু পল্লীর প্ৰতিগৃহে সকলে সেই সুমধুর ভাব অনুভব করিতে লাগিল। ইন্দুকে সেখানে কে না ভালবাসিত ? সকলের স্নেহ হরিণ পূর্বক বালিকা তাহার হৃদয়কুসুম পূর্ণ করিয়া রাখিয়াছিল। আশ্বিন মাসে নুতন জামাইকে সঙ্গে লইয়া দেশে আসিবার বন্দোবস্ত হইতেছে; জিনিষ পত্র বাধা হইতেছে; যাত্রার দিনও স্থির হইয়া গিয়াছে ; এমন সময় একদিন টেলিগ্ৰাম আসিল, পরেশের বড় অসুখ ; তাহার \\