পাতা:নৈবেদ্য - জলধর সেন.pdf/৪৪

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নৈবেদ্য কোন রকম করিয়া সংসার চলিতে লাগিল। পূৰ্ব্বে সুখে চলিয়াছিল, এখন দুঃখে চলিতে লাগিল। কাহার দিন পড়িয়া থাকে ? আমাদেরও দিন পড়িয়া রহিল না। নিজের কাজ লইয়াই সর্বদা ব্যস্ত থাকি,তাম, ছেলে দুটিকে বাড়ীতে মনোযোগ সহকারে পড়াইতাম, কোন কোন শনিবারে বাড়ী যাইতাম। পিসিমার স্নেহে, দিদির আকৃত্রিম যত্নে বাড়ীতে সপ্তাহের ছুটির দিন ক্ষণস্থায়ী সুখস্বপ্নের ন্যায় অতিবাহিত হইত। এইভাবে এক বৎসর কাটিয়া গেল। মনের মধ্যে কি একটা অতৃপ্তি গাথা থাকিত, তাহার কোন কারণ খুজিয়া পাইতাম না। এক একদিন স্কুলের ছুটী হওয়ার পর বাসায় আসিয়া আমার শয়ন-কক্ষটীিতে একখানা চেয়ারের উপর বসিয়া বদ্ধদৃষ্টিতে দূর পথের দিকে চাহিয়া থাকিতাম। আমাদের বাসা গ্রামের এক প্ৰান্তে ; তাহার পরই একটা মাঠ ; মাঠের ভিতর দিয়া একটা ইষ্টক্যবদ্ধ পথ চলিয়া গিয়াছে; দুই পাশে অশ্বখ্য, ঝাউ গাছের সারি ; অপরাহের সূৰ্য্যকিরণে গাছের ছায়া প্ৰান্তরবক্ষে বিলম্বিত হইত, অশ্বখশাখার শু্যামল পত্রের মধ্যে বসিয়া নানাজাতীয় পাখী হর্ষকাকলী আরম্ভ করিত, বায়ু কম্পিত ঝাউশীর্ষ হইতে শার শার শব্দ উঠিতে থাকিত, ঠিক তাহা আমার আকুল দীর্ঘশ্বাসের অনুরূপ। বাল্যজীবনে কত আশী, কত আকাজক্ষা ছিল, সহস্ৰ আকাশকুসুম কল্পনানেত্রের সম্মুখে প্রতিদিন প্রস্ফুটিত হইয়া উঠিত; দেশের উন্নতি, সমাজের সংস্কার, জীবনের সফলতা-সকল আশা সন্ধ্যার আলোক-রেখার ন্যায় একে একে “ আমার এই অকৰ্ম্মণ্য জীবন হইতে বিদায় গ্ৰহণ করিয়াছে। এখন চারিদিক অন্ধকার! কে জানিত পচিশ টাকা মূল্যের মাইনর স্কুলের সেকেণ্ড মাষ্টারী আমার জীবনের অদ্বিতীয় সম্বল হইবে। হেমবাবুর সেই দুইটি S)።”