যদি কর্ম্মজীবনের উপর আদর্শের এইরূপ প্রভাব হয়, কর্ম্মজীবনও আদর্শ গঠনে তদ্রুপ কম শক্তিমান্ নহে। আদর্শের সত্য কর্ম্মজীবনেই প্রমাণিত। আদর্শের পরিণতি কর্ম্মজীবনের প্রত্যক্ষ অনুভবে। আদর্শ থাকিলেই প্রমাণিত হয় যে, কোন না কোনখানে, কোন না কোনরূপে উহা কর্ম্মজীবনেও পরিণত হইয়াছে। আদর্শ বৃহত্তর হইতে পারে, কিন্তু উহা কর্ম্মজীবনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশের বিস্তৃত ভাব মাত্র। আদর্শ অনেক স্থলেই ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র কর্ম্মবিন্দুর সমষ্টি ও সাধারণ ভাব মাত্র।
কর্ম্মজীবনেই আদর্শের শক্তি প্রকাশ। কর্ম্মজীবনের মধ্য দিয়াই উহা আমাদের উপর কার্য্য করিতে পারে। কর্ম্মজীবনের মধ্য দিয়া আদর্শ আমাদের জীবনে গ্রহণোপযোগী আকারে পরিববর্ত্তিত হইয়া আমাদের ইন্দ্রিয়ানুভূতির ভূমিতে অবতরণ করে। কর্ম্মজীবনকে সোপান করিয়াই আমরা আদর্শে আরোহণ করি; উহারই উপর আমাদের আশা ভরসা সব রাখি; উহাই আমাদিগকে কার্য্যে উৎসাহ দেয়।
যাহাদের বাক্যতূলিকা আদর্শকে অতি সুন্দর বর্ণে অঙ্কিত করিতে পারে অথবা যাহারা সূক্ষ্মতম তত্ত্বসমূহ উদ্ভাবন করিতে পারে এরূপ লক্ষ লক্ষ ব্যক্তি অপেক্ষা এক ব্যক্তি—যে নিজ জীবনে উহাকে প্রতিফলিত করিতে পারিয়াছে—অধিক শক্তিশালী।