আমরা হিন্দুরা বিশ্বাস করি, পুস্তক কেবল তত্ত্ববিশেষের ভাসা ভাসা বর্ণনা মাত্র। সকল শিল্পের, সকল বিদ্যার, সর্ব্বোপরি ধর্ম্মের জীবন্ত রহস্য-সমূহ গুরু হইতে শিষ্যে সঞ্চারিত হওয়া চাই।
স্মরণাতীত কাল হইতে ভারতে দৃঢ় অনুরাগী ব্যক্তিগণ অন্তর্জ্জীবনের রহস্য নির্ব্বিঘ্নে আলোচনার জন্য সর্ব্বদাই লোকালয় পরিত্যাগ করিয়া অতি নিভৃত স্থানসমূহে গিয়া বাস করিয়াছেন, আর এখনও এমন একটী বন, পর্ব্বত বা পবিত্রস্থান নাই, কিম্বদন্তী যাহাকে কোন মহাত্মার বাসস্থান বলিয়া উহার অঙ্গে পবিত্রতার মহিমা মাখাইয়া না দেয়।
তার পর এই উক্তিটীও সর্ব্বজনপ্রসিদ্ধ যে,
“রমতা সাধু, বহতা পানি।
যহ কভি না মৈল লখানি॥”
অর্থাৎ যে জল প্রবাহিত হয়, তাহা যেমন বিশুদ্ধ থাকে, তদ্রূপ যে সাধু ভ্রমণ করিয়া বেড়ান, তিনিও তদ্রুপ পবিত্র থাকেন।
ভারতে যাঁহারা ব্রহ্মচর্য্য অবলম্বন করিয়া ধর্ম্মজীবন গ্রহণ করেন, তাঁহারা সাধারণতঃ ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে বিচরণ করিয়া বিভিন্ন তীর্থ ও দেবমন্দির দর্শন করিয়াই অধিকাংশ জীবন কাটাইয়া থাকেন—কোন জিনিষ যেমন সর্ব্বদা নাড়াচাড়া করিলে তাহাতে মরিচা ধরে না, তাঁহারা বলেন, এইরূপ ভ্রমণে তাঁহাদের মধ্যেও তদ্রূপ মলিনতা প্রবেশ করিবে না। ইহাতে আর এক উপকার হয় এই যে, তাঁহারা প্রত্যেক ব্যক্তির দ্বারে ধর্ম্ম বহন করিয়া