পাতা:পঞ্চনদের তীরে - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১০০

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চনদের তীরে

পারছি না! আমার অধীনে সৈন্য আছে মোটে পঁয়ত্রিশ হাজার, আর শশীগুপ্ত আক্রমণ করতে আসছে পঞ্চাশ হাজার সৈন্য নিয়ে। এটা কি বিপদের কথা নয়?”

 চাণক্য সস্নেহে চন্দ্রগুপ্তের মাথায় হাত রেখে বললেন, “বৎস, আশ্বস্ত হও। চিন্তার কোনই কারণ নেই। সুবন্ধু, মহারাজা পুরুর অধীনে কত সৈন্য আছে?”

 —“গ্রীকদের অধীনতা স্বীকার করবার পর মহারাজা পুরুর রাজ্য আর লোকসংখ্যা অনেক বেড়েছে। ইচ্ছা করলে তিনি এখন আশীহাজার সৈন্য নিয়ে রণক্ষেত্রে অবতীর্ণ হ’তে পারেন।”

 —“তিনি আমাদের সঙ্গে দেখা করতে আসছেন কত সৈন্য নিয়ে?”

 —“চল্লিশ হাজার।”

 —“শুনছ চন্দ্রগুপ্ত?”

 কিছুমাত্র উৎসাহিত না হয়ে চন্দ্রগুপ্ত বললেন, “শুনে কি লাভ গুরুদেব? মহারাজা হস্তীর সঙ্গেও মহারাজা পুরু যদি মিলতে পারতেন, তাহ’লে আজ ভারতের মাটিতে গ্রীকদের পদচিহ্ন পড়ত না। এবারেও মহারাজা পুরু আসবার আগেই অসংখ্য শত্রুর চাপে আমরা মারা পড়বো। সেইজন্যেই আমি এগিয়ে গিয়ে ব্যূহ রচনা করবার আগেই শত্রুদের আক্রমণ করতে চাই। কিন্তু দেখছি, আপনার ইচ্ছা অন্য রকম।”

 চাণক্য আবার সুবন্ধুর দিকে ফিরে বললেন, “মহারাজ পুরু শশীগুপ্তের গতিবিধির খবর রাখেন তো?”

 —“সেই খবর পেয়েই তো তিনি শশীগুপ্তের চেয়েও দ্রুতগতিতে ছুটে আসছেন!”

 চাণক্যের দুই চক্ষে আগুন জ্ব’লে উঠল! এতক্ষণ পরে আসন ছেড়ে নেমে দাঁড়িয়ে তিনি গম্ভীর স্বরে বললেন, “চন্দ্রগুপ্ত! এই

৯৮