পাতা:পঞ্চনদের তীরে - হেমেন্দ্রকুমার রায়.pdf/১০৬

এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
পঞ্চনদের তীরে

 উচ্চভূমির উপরে হাতীর পিঠে চাণক্য স্থির হয়ে বসেছিলেন পাথরের মূর্তির মতো। তাঁর মুখও স্থির মুখোসের মতো, মনের কোনো ভাবই তা প্রকাশ করে না।

 হঠাৎ সুবন্ধু বেগে ঘোড়া চালিয়ে চাণক্যের হাতীর পাশে এসে ব্যস্ত কণ্ঠে ব’লে উঠল, “গুরুদেব! গুরুদেব!”

 —“বৎস?”

 —“শত্রুদের সমস্ত গজারোহী আর অশ্বারোহী রথারোহী সৈন্য মাঝখানে এসে আমাদের আক্রমণ করবার উদ্যোগ করছে।”

 —“সেটা আমি দেখতেই পাচ্ছি!”

 —“শত্রুদের ব্যূহের দুইপাশ এখন দুর্বল হয়ে পড়েছে। এখন যদি আমাদের রথ, গজ আর অশ্ব শত্রুদের ব্যূহের দুই পাশ আক্রমণ করে, তাহ’লে-"

 বাধা দিয়ে চাণক্য বললেন, “তাহ’লে আমাদের সুবিধা হ’তেও পারে, না হ’তেও পারে। সংখ্যায় আমরা কম — শত্রুদের ঘিরে ফেলবার বা সহজে কাবু করবার শক্তি আমাদের নেই। এ সময়ে আমাদের ব্যূহ বিশৃঙ্খল হ’লে ফল ভালো হবে না। আমরা কেবল এইখানে দাঁড়িয়ে আত্মরক্ষাই করবো।”

 —“তবে কি শত্রুদের ঠেকাবার জন্যে আমরাও সমস্ত রথ, গজ আর অশ্বকে মাঝখানে এনে হাজির করবো?”

 চাণক্যের ওষ্ঠাধরে ফুটল অল্প-হাসির আভাস! “সুবন্ধু, তুমি বীর বটে, কিন্তু যুদ্ধ-রীতিতে নিতান্ত কাঁচা! তোমার কথামতো কাজ করলে আমাদেরও দুই পাশ দুর্বল হয়ে পড়বে আর সংখ্যায় বলিষ্ঠ শত্রুরা আমাদের ঘিরে ফেলবে চারিদিক থেকে!”

 —“কিন্তু গুরুদেব, শত্রুদের অত রথ, গজ আর অশ্ব যদি

১০৪